ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক নিষিদ্ধ করতে ইরাকের পার্লামেন্ট আইন

ইরাকের পার্লামেন্টের একটি খসড়া আইনের অনুমোদন দিয়েছে, যেখানে ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দেশটির এ পদক্ষেপের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। একই সাথে সংগঠনটি পুরো মুসলিম বিশ্বকে ইরাককে অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছে। খবর মিডলইস্টমনিটর।

ইরাকের পার্লামেন্ট

এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তটি ইরাকি জনগণের সততা এবং ফিলিস্তিনি জনগণ ও তাদের ন্যায়সঙ্গত দাবির সমর্থনে ইতিহাসজুড়ে তাদের সুপরিচিত অবস্থানকে প্রকাশ করেছে। আরব ও মুসলিম বিশ্বকে এই সম্মানজনক পদক্ষেপ অনুসরণ এবং দখলকারী ইসরায়েলি সত্তার সাথে সব ধরনের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ নিষিদ্ধ করা উচিত।

গত বুধবার ইরাকি কাউন্সিল অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ নিষিদ্ধ করে একটি খসড়া আইন পেশ করে। বিলটিতে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের আহ্বান জানালে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। ইরাক এবং ইরাকি কুর্দিস্তান অঞ্চলের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা বন্ধ করাই এই বিলের মূল লক্ষ্য। বিলটি ওইদিনই অনুমোদন দেয় পার্লামেন্ট।

হামাস

বিলে উত্তর কুর্দিস্তানসহ সমস্ত ইরাকি কর্মকর্তা, সরকারি প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি খাতের কোম্পানি এবং গণমাধ্যমের সাথে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্থাপন বা স্বাভাবিকীকরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিলটি ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক, রাজনৈতিক, সামরিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বা যে কোনো উপায়ে সম্পর্ক স্থাপনে বাধা দেবে।

বিলে বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা ইরাকের ভেতর এবং বাইরের সকল ইরাকিদের জন্য প্রযোজ্য। কর্মকর্তা, রাষ্ট্রীয় কর্মচারী, ইরাকে বসবাসকারী বেসামরিক, সামরিক, বিদেশিসহ সংশ্লিষ্ট সবার জন্য প্রযোজ্য।

ইরাকের বিশিষ্ট শিয়া ধর্মগুরু মুকতাদা আল-সদর গত ২৩ এপ্রিল একটি টুইট বার্তায় তার দলের সদস্যদের বিলটি উত্থাপন করার আহ্বান জানান। গত বুধবার তার দল সাদরিস্ট ব্লক বিলটি উত্থাপন করে। গত অক্টোবরের পার্লামেন্ট নির্বাচনে দলটি সর্বাধিক আসন জিতেছিল।

বিলটিকে আইনে পরিণত করার জন্য এখনো বেশ কিছু ধাপ বাকি রয়েছে।

ইরানপন্থী ফাতিহ জোটের একজন নেতা মোহাম্মদ আল-হায়ানি বলেন, আমরা ইসরায়েলি সত্তার সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করি। আমরা অবশ্যই পার্লামেন্টে বিলের পক্ষে ভোট দেব। বর্তমানে কিছু রাজনৈতিক পক্ষ ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদের প্রতিরোধে ইরাকের জন্য এ ধরনের একটি আইন থাকা প্রয়োজন।

গত দুই বছরের মধ্যে চারটি আরব দেশ- সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুদান, বাহরাইন এবং মরক্কো আব্রাহাম অ্যাকর্ডের অংশ হিসাবে ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে। কথিত মার্কিন নেতৃত্বাধীন এই শান্তি উদ্যোগের আওতায় এমন পদক্ষেপ নেয় দেশ চারটি। তবে বেশিরভাগ ইরাকি আইনপ্রণেতাই মনে করেন, ইরাকে কখনোই এমনটি ঘটবে না।