লঙ্কানদের ৮ শর্ত, এক নম্বরে গোতাবায়ার পদত্যাগ

প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজপাকসের পদত্যাগ পিটিশনসহ শ্রীলঙ্কার আসন্ন নতুন মন্ত্রিসভা বরাবর ৮ দফা দাবি নিয়ে রাজধানী কলম্বোর গ্যালে ফেস গ্রিনে হাজির হয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। রাজপাকসে পরিবারবিরোধী বিক্ষোভ চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। 'গোতা গো হোম' আন্দোলনের ৩৬তম দিন শুক্রবার এই শর্তগুলো পেশ করেছেন বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধি চামেরা দেদুওয়াগে। এই দাবিগুলোর এক নম্বরেই রয়েছে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগ।

তাদের ৮ শর্ত, এক নম্বরে গোতাবায়ার পদত্যাগ

চামেরা বলেন, সংগ্রামটি এখন শুধু গ্যালে ফেস বা গোতা গো হোমের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি এমন একটি ভরসার স্থান হয়ে উঠেছে, যেখান থেকে সমগ্র শ্রীলঙ্কার নাগরিকদের তাদের অধিকার আদায়ের জন্য সোচ্চার হতে প্রেরণা জোগাবে।

সমাজকর্মী মানুরি পাবাসরি বলেন, জনগণের প্রতিবাদ একটি প্রতীকী মুহূর্ত এবং এটি শ্রীলঙ্কাকে বিশ্বের মানচিত্রে স্থান দিয়েছে। কেউ যদি দাবি করেন, এই সংগ্রাম কলম্বোর উপকণ্ঠে পৌঁছায়নি এবং সমগ্র শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিত্ব করছে না- তাহলে ভুল হবে। আমরা ৬০টি সুশীলসমাজ সংস্থার সঙ্গে প্রায় ৮টি বৈঠকের পর ২০০ জনেরও বেশি লোকের সঙ্গে আলোচনার পর জনকেন্দ্রিক দাবিগুলো তৈরি করেছি।

গোতাবায়া

দাবিগুলো কী?

এক. অবিলম্বে গোতাবায়া রাজাপাকসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে। সেই সঙ্গে পদত্যাগের পর শ্রীলঙ্কার শাসক সদস্যদের ওপর শাসন ও আইনের শাসনের ওপর কোনো অযাচিত প্রভাব ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে।

দুই. জাতিকে পুনরুদ্ধারের পথে নিয়ে যেতে পূর্বনির্ধারিত সময়ের জন্য (১৮ মাসের বেশি নয়) একটি অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

তিন. যত দ্রুত সম্ভব সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনী সম্পন্ন করতে হবে। এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্সি বিষয়ক ২০-এ ধারা বাতিল করতে হবে।

চার. বর্তমান সংকট পরিচালনার জন্য সরকারকে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং সব প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হতে হবে। বিরাজমান সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট মানবিক সংকটে রূপান্তরিত হয়েছে। তাই, বর্তমান সংকট সমাধানের জন্য স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান প্রয়োজন।

পাঁচ. সব নির্বাচিত এবং নিযুক্ত কর্মকর্তাদের সম্পদের বিবরণ ঘোষণা করতে হবে এবং বৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদ রেখে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ পুনরুদ্ধার করতে হবে।

ছয়. দেশের সব নাগরিক অধিকারকে সম্মান করার জন্য অবিলম্বে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

সাত. শ্রীলঙ্কার সংবিধানে সব নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে জীবনের অধিকার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে (ভারতীয় সংবিধানে জীবনের অধিকার সংরক্ষণের ধারা খুঁজে পাবেন)।

আট. অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় আইন সংশোধন করতে হবে।