জ্বালানির দামে দিশেহারা বাইডেন সৌদি সফরের কথা ভাবছেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি আরব সফরের কথা ভাবছেন। চলতি মাসের শেষে ইউরোপ যাবার পথে তিনি সৌদি আরবে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা করছেন। কংগ্রেস নির্বাচন সামনে রেখে জ্বালানি মূল্য সহনীয় করতে সৌদি থেকে সরবরাহ বৃদ্ধি এবং মস্কো ও বেইজিংয়ের কূটনৈতিক বলয়ে রিয়াদের ঝুঁকে পড়া ঠেকাতে এ সফর।

চলতি মাসে সৌদি আরব সফরের কথা ভাবছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা উপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থার (জিসিসি) সদস্য বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতাদের সঙ্গেও বাইডেনের বৈঠক আয়োজনের সম্ভাবনা নিয়ে ভাবছেন। সৌদি আরব সফরের বিষয়টি নিশ্চিত হলে বাইডেন ইসরায়েলেও যেতে পারেন।

২০১৮ সালে সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর সৌদি যুবরাজকে খুনি বলে অভিহিত করেছিলেন জো বাইডেন। ২০১৯ সালে নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে সৌদি রাজপরিবারকে একঘরে করার কথাও বলেছিলেন তিনি। কাজেই সৌদি যুবরাজের সঙ্গে যে কোনো সাক্ষাতকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এতদিনকার রাজনৈতিক অবস্থান থেকে এক ধরনের পিছু হটা বলে ভাবতে পারেন অনেকে।

এর আগে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামে ধস ঠেকাতে রাশিয়া ও সৌদি আরব উৎপাদন-সীমা বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। মস্কোর সঙ্গে ওই সমঝোতার কারণে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর অনুরোধ সত্ত্বেও সৌদি সরকার তেল উত্তোলন বৃদ্ধি করেনি।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চীনা ও রুশ কর্মকর্তাদের সৌদি আরবে একাধিক সফর পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি করেছে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ মঙ্গলবার সৌদি আরব সফর করেছেন।

বাইডেন ও সৌদি যুবরাজের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে সেটা জ্বালানি তেল ও গ্যাসের আন্তর্জাতিক বাজারে এক ধরনের স্বস্তির বার্তা দেবে। সম্ভাব্য বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সৌদি যুবরাজকে জ্বালানি তেল উত্তোলন বৃদ্ধির আহ্বান জানাবেন। একইসঙ্গে এমন বৈঠক বিশ্বের বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী সৌদি আরবের সঙ্গে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সাত দশকের বেশি সময়ের সম্পর্ক নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর উদ্বেগের অবসান ঘটাবে।

এপি জানিয়েছে, সম্প্রতি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে জো বাইডেনকে ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করেছেন। ইসরায়েলের পক্ষ থেকেও যুক্তরাষ্ট্রকে একই অনুরোধ করা হয়েছে। সৌদি-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে এক ধরনের বেষ্টনি হিসেবে দেখে থাকে।

মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সমন্বয়ক ব্রেট ম্যাকগর্ক ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জ্বালানি নীতি বিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা আমোস হকস্টাইন সম্প্রতি সৌদি আরব সফর করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েমেন বিষয়ক বিশেষ দূত টিম লেন্ডারকিংও সৌদি সফর করেছেন। সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।