শুধু প্যাকেট নয়, প্রতিটি সিগারেটেই থাকবে সতর্কবার্তা

ধূমপানের পরিণতি সম্পর্কে আরো বেশি সাবধান করার জন্য এখন থেকে প্রতিটি সিগারেটের গায়েই সতর্কবার্তা লিখে দেওয়ার কথা ভাবছে কানাডা সরকার। বিশ্বে প্রথমবারের মতো এমন পদক্ষেপের মাধ্যমে আরো বেশি মানুষকে সতর্ক করা যাবে বলে আশা করছেন দেশটির মানসিক স্বাস্থ্য ও আসক্তি বিষয়ক মন্ত্রী ক্যারোলিন বেনেট। খবর হিন্দুস্তান টাইমস।

সিগারেটের প্যাকেটে লেখা থাকে সতর্কবাণী

বিশ্বের প্রায় সব দেশেই এখন সিগারেটের প্যাকেটের ওপর সতর্কবার্তা ছাপানো থাকে। এমনকি অনেক দেশে প্যাকেটের ওপর ধূমপানজনিত কিছু রোগের পরিণতির ছবিও থাকে। তারপরও সতর্ক হচ্ছে না ধূমপায়ীরা। তাই ধূমপায়ীদের আরো সতর্ক করতে সিগারেটের প্যাকেটের পাশাপাশি এখন প্রত্যেকটি সিগারেটেই সতর্কবার্তা লেখার চিন্তাভাবনা করছে তারা। এর মাধ্যমে ধূমপান কমতে পারে বলে প্রত্যাশা কানাডা সরকারের।

প্রস্তাবিত বিষয়টির ব্যাপারে স্টেকহোল্ডারদের সাথে পরামর্শ করবে সরকার। এটি বাস্তবায়িত হলে কানাডা হবে বিশ্বের প্রথম দেশ যারা এ ধরনের লেবেলিং চালু করবে।

এখন থেকে প্রতি সিগারেটেই লেখা থাকবে সতর্কবার্তা

হেলথ কানাডা থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, নতুন প্যাকেজিং পরিকল্পনার উদ্দেশ্য হল, ধূমপানের ক্ষতিকর দিকটি যেন কারোই চোখ এড়িয়ে না যায়। তারা আশা করছে, সিগারেট এবং অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্যের টিপিং পেপারে এরকম লেবেল লাগালে স্বাস্থ্য সতর্কতাগুলো এড়িয়ে যাওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে যাবে।

দেশটির মানসিক স্বাস্থ্য ও আসক্তি বিষয়ক মন্ত্রী ক্যারোলিন বেনেট বলেন, এখন অনেক প্যাকেটেই ধূমপানের ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কিত তথ্যের পাশাপাশি ছবিও ছাপানো হয়। কিন্তু ব্যবহারকারীরা বছরের পর বছর ধরে এটি দেখতে দেখতে এগুলোর সাথে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। ফলে তারা এটি পাশ কাটিয়ে যায়।

সাংবাদিকদের তিনি জানান, কানাডায় ২০০১ সাল থেকে সিগারেটের প্যাকেটে ছবি সংবলিত সতর্কবার্তা চালু করা হয়। কিন্তু এর মাধ্যমে সরকার যতটুকু সাড়া পাওয়ার আশা করেছিল, ততটা কার্যকর ফল পাওয়া যায়নি।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের আশঙ্কা হচ্ছে, এভাবে দেওয়া বার্তা তার উপযোগিতা ও অভিনবত্ব হারিয়েছে। ফলে এ বার্তার প্রভাবও নষ্ট হয়ে গেছে। এসব বার্তার মাধ্যমে ধূমপান ও ধূমপায়ীর সংখ্যা কমিয়ে আনার যে উদ্দেশ্য ছিল তা ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে।

কানডার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জিন-ইভেস ডুকলোস বলেন, নতুন কৌশলের মাধ্যমে আমরা ২০৩৫ সালের মধ্যে তামাক ব্যবহার ১৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশে নিয়ে আসার জন্য কাজ করছি। এ বিষয়ে জনসাধারণের পরামর্শ নিতে গতকাল শনিবার থেকে দেশটিতে ৭৫ দিনের ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে।

কানাডার হার্ট অ্যান্ড স্ট্রোক ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ডৌগ রথ বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি বাস্তবায়িত হলে সিগারেটের জন্য কানাডায় বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী স্বাস্থ্য সতর্কতা ব্যবস্থা থাকবে। এটি তরুণদের আকর্ষণ কমতে যেমন সহায়ক হবে তেমনি সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ধূমপায়ীদের চেষ্টাকেও সমর্থন যোগাবে।

হেলথ কানাডার তথ্যানুযায়ী, ধূমপান বা তামাকের ব্যবহারের কারণে কানাডায় প্রতি বছর ৪৮ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে। ৩ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার দেশ কানাডায় ৪০ লাখের বেশি মানুষ নিয়মিত বা অনিয়মিতভাবে ধূমপান করে থাকে।