গবেষণা: দিল্লির বাসিন্দাদের আয়ু কমে যেতে পারে ১০ বছর

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ দূষিত শহর। এই বায়ু দূষণ শহরটিতে যারা বাস করেন তাদের প্রায় ১০ বছর আয়ু কমিয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। একটি মার্কিন গবেষণায় এ আশঙ্কার কথা উঠে এসেছে। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বর্তমান বায়ু মানের স্তরে ভারতীয়দের গড় আয়ু পাঁচ বছর কমে গেছে। বিবিসি।

গবেষণা: দিল্লির বাসিন্দাদের আয়ু কমে যেতে পারে ১০ বছর

ভারতের ১.৩ বিলিয়ন মানুষ এমন এলাকায় বাস করেন যেখানে বার্ষিক গড় কণা দূষণের মাত্রা ‘পিএম৫’ ছাড়িয়ে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত সর্বোচ্চ সীমা পিএম৫, সহনীয় মাত্রা পিএম২.৫। প্রতি বছর দূষিত বাতাস ভারতের লাখ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সাধারণত শীতকালে ভারতীয় শহরগুলো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। বাতাসে থাকে বিপজ্জনক উচ্চমাত্রার সূক্ষ্ম কণা পদার্থ। বাতাসে পিএমের (পারটিক্যুলেট ম্যাটার) মাত্রা ২.৫ এর চেয়ে বেশি হলে ফুসফুসে সমস্যা দেখা দেয় এবং ছড়িয়ে পড়ে নানা রোগ।

ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগোর এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের (ইপিআইসি) বায়ুর গুণমান জীবন সূচকে বলা হচ্ছে, প্রায় ৫১০ মিলিয়ন মানুষ যারা উত্তর ভারতে বাস করে (মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ), দূষিত বায়ুতে তাদের জীবনের ৭.৬ বছর আয়ু হারানোর শঙ্কা রয়েছে।

ইপিআইসি বলছে, ২০১৩ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী বায়ু দূষণের প্রায় ৪৪ শতাংশই ভারতে বিদ্যমান। বর্তমানে দেশটি বিশ্বের দ্বিতীয় দূষিত দেশ। ৬৩ শতাংশের বেশি ভারতীয় অনিরাপদ বায়ু দূষণ নিয়েই বাস করে। ২০১৯ সালে ভারতের বাতাসে গড় কণা পদার্থের ঘনত্ব ছিল ৭০.৩, যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ।

প্রতিবেদনের অন্যতম লেখক মাইকেল গ্রিনস্টোন বলেছেন, মঙ্গলবাসীরা যদি পৃথিবীতে এসে বাতাস দূর্ষিত হয় এমন পদার্থ স্প্রে করে, তাহলে পৃথিবীর মানুষের গড় আয়ু দুই বছরেরও বেশি কমে যাবে এবং তা হবে বিশ্বব্যাপী একটি জরুরি অবস্থা। অথচ আমরা নিজেরাই পৃথিবীর বাতাসে এমন স্প্রে করছি।

ইপিআইসি বলছে, বায়ু দূষণ ভারতে মানব জীবনের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। দেশটিতে ১৯৯৮ সাল থেকে বায়ু দূষণ ৬১.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি ধূমপানের ক্ষতির চেয়ে মারাত্মক, যা আয়ু কমিয়ে দেয়।

ভারতে বায়ু দূষণ বৃদ্ধির প্রধান কারণ অপরিকল্পিত শিল্পায়ন ও উন্নয়ন এবং জীবাশ্ম জ্বালানির আকাশছোঁয়া ব্যবহার।