আমেরিকা-ইউরোপের পর দারিদ্রপীড়িত আফিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া মহাদেশে জিকার প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ-বিশ্লেষকরা। সোমবার দ্য গার্ডিয়ানে স্বাস্থ্য বিষয়ক এক প্রতিবেদনে এমনটি আশঙ্কা করা হয়।
এখন পর্যন্ত ব্রাজিল, কলম্বিয়াসহ লাতিন আমেরিকায় লাখ লাখ মানুষ জিকায় আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন কয়েকশত মানুষ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে ব্রাজিলে ২০ লাখ, কলম্বিয়ায় ১০ লাখ মানুষ জিকা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন। দেশদুটিতে জিকার সংক্রমনের প্রভাবে কয়েক হাজার শিশু ত্রটি নিয়ে জন্মেছেন। অনেক শিশু মাথা ছোট এবং ক্ষতিগ্রস্ত মস্তিষ্ক নিয়ে জন্মাচ্ছেন।
তবে স্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এডিস মশাবাহিত রোগটি আফ্রিকা এবং এশিয়ার গ্রীষ্ম প্রধান দেশগুলোতে ছড়াতে পারে। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য বিষয়ক নজরদারি চালু হয়েছে। গত শতকের চল্লিশের দশকে আফ্রিকার উগান্ডায় সর্বপ্রথম শনাক্ত করা হয়েছিল জিকা ভাইরাস। লিভারপুল স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের গবেষক ফিলিপ ম্যাককল মনে করেন, লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে বর্তমানে যে জিকার সংক্রমন দেখা যাচ্ছে, তা সম্ভবত এশীয় গোত্রের।
প্রতিষ্ঠানটির আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য বিভাগের অধ্যাপক জিমি হোয়াইটওয়ার্থ বলেন, লাতিন আমেরিকার জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত কোন ব্যক্তি আফ্রিকা ভ্রমনে গেলে সেখানে মশার মাধ্যমে রোগটি ছড়াতে পারে। কাজেই যেসব মশাদেশে এখনো জিকা ছড়ায় সেসব মহাদেশে স্বাস্থ্য বিষয়ক সতর্কতা জারি করা উচিত। জিকা আক্রান্ত দেশগুলোর কোন নাগরিককে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে প্রবেশ করতে দেয়া উচিত নয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মাতৃত্ব, নবজাতক, শিশু ও কিশোর স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক অ্যান্থনি কস্টেলো জানান,শুধু মশার মাধ্যম ছাড়াও যৌন সংসর্গ বা রক্তদানের মাধ্যমেও জিকা ছড়াচ্ছে। এতে আফ্রিকা বা এশিয়াতেও এ ভাইরাসের সংক্রমন ঘটবে না এমন নিশ্চয়তা দেয়া যায় না।