আইসিজে: রাখাইনে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার নির্দেশ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে থাকা রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দিতে দেশটির প্রতি চারটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় (বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টা) নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগেতে অবস্থিত আইসিজেতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার রায়ে এ আদেশ দেন বিচারপতি আবদুল কাভি আহমেদ ইউসুফ।

আদেশে বলা হয়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বর্তমানে যেসব রোহিঙ্গারা আছেন তাদের সুরক্ষা দিতে দেশটিকে সকল ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি দেশটির সেনাবাহিনী বা অন্য কোন সশস্ত্রবাহিনী যেনো রোহিঙ্গাদের নির্যাতন, গণহত্যা বা উসকানি না দেয় সে বিষয়ে মিয়ানমারকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

গণহত্যার সাক্ষ্যপ্রমাণ ধ্বংস করা যাবে না উল্লেখ করে আদেশে আরো বলা হয়, আগামী চার মাসের মধ্যে এসব রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করতে হবে। পাশাপাশি গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলটি সম্পূর্ণ নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার বিষয়ে আদালতকে অবহিত করতে হবে।

এছাড়া গাম্বিয়া এসব বিষয় পর্যালোচনা করে আদালতের কাছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন করতে পারবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর পূর্বপরিকল্পিত সহিংসতা চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এই সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর তারা গণহত্যা ও ধর্ষণসহ অমানবিক নির্যাতন চালায়। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় নয় লাখ রোহিঙ্গা।

পরে গত বছরের ১১ নভেম্বর নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগেতে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) এ নৃশংসতাকে 'গণহত্যা' আখ্যা দিয়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।

পরে ওই বছরের ১০-১২ ডিসেম্বর আইসিজেতে দেশটির বিরুদ্ধে শুনানি হয়। সেখানে গাম্বিয়ার পক্ষে লড়েন দেশটির বিচার বিষয়ক মন্ত্রী এবং অ্যাটর্নি জেনারেল আবুবাকর তামবাদাউ। আর মিয়ানমারের পক্ষে লড়েন দেশটির উপদেষ্টা অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন একটি দল।

শুনানি শেষে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি এ মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়। যার প্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের বিরুদ্ধে চারটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ জারি করে রায় দেন আদালত।