আপনি পড়ছেন

বিশ্বজুড়ে এখন আতঙ্কের নাম নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে শুরু হয়ে এটি গ্রাস করছে একের পর এক দেশ। এ অবস্থায় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গতকাল শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির প্রধান ড. টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস এই ঘোষণা দেন।

corona who

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৫৭ দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল শুক্রবারই ইউরোপ, আমেরিকা ও আফ্রিকার ছয়টি দেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। বিশ্বব্যাপী আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৮৪ হাজার মানুষ। মারা গেছেন ২ হাজার ৮৭২ জনেরও বেশি।

টেড্রস অ্যাডহানম বলেন, ‘আমরা এ বিপদকে খাটো করে দেখতে রাজি নই। তাই আমরা বলছি, এ ভাইরাসের বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি খুবই বেশি। সঙ্গত কারণেই সতর্কতার মাত্রা ‘উচ্চ’ থেকে ‘সর্বোচ্চ’ ধাপে নিয়ে গেছি।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হেলথ ইমার্জেন্সি বিভাগের পরিচালক ডা. মাইক রায়ান বলেন, কোনো রোগের ঝুঁকি দেখলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যত ধরনের সতর্কতা জারি করতে পারে, এবারের মাত্রা তার মধ্যে সর্বোচ্চ।

রয়টার্স জানিয়েছে, এই আতঙ্কজনক পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজারগুলো ২০০৮ সালের বিশ্বমন্দার পর সবচেয়ে বাজে সময় পার করেছে। গত এক সপ্তাহে পুঁজিবাজার থেকে হাওয়া হয়ে গেছে ছয় ট্রিলিয়ন ডলার। ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপের মাধ্যমে চীন নিজের দেশে এ ভাইরাসের বিস্তার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসায় ব্যবসায়ীরা আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু তাদের সেই আশা ভেস্তে যেতে বসেছে গত কয়েক দিনে এ ভাইরাস অত্যন্ত দ্রুত বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে থাকায়। 

চীনের তিনটি বড় এয়ারলাইন্স আবার কাজে ফেরার ঘোষণা দিয়ে কিছু আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু করেছে। করোনাভাইরাসের কারণে স্থগিত হয়ে যাওয়া সাংহাই ফ্যাশন শো এখন অনলাইনে চালানোর সিদ্ধান্ত  নিয়েছে। কিন্তু চীনের বাইরে পরিস্থিতি ক্রমশ নাজুক হয়ে উঠছে। অটোমোবাইল ব্যবসার অন্যতম বড় বার্ষিক আয়োজন জেনিভা কার শো স্থগিত করেছে সুইজারল্যান্ড।

লাতিন আমেরিকার দেশ মেক্সিকো, আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়া, ইউরোপের ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস ও লিথুয়ানিয়ায় প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর সবগুলো ঘটনার সঙ্গেই পাওয়া গেছে ইতালির যোগাযোগ। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ইতালির অবস্থাই সবচেয়ে খারাপ। সেখানে ৬৫০ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের।

চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। সেখানে ২ হাজার ৩৩৭ জনের মধ্যে সংক্রমণ ঘটেছে, মৃত্যু হয়েছে ১৬ জনের।

তবে চীনের বাইরে মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ইরানে। সেখানে আক্রান্ত হয়েছে ৩৮৮ জন, প্রাণ গেছে ৩৪ জনের। যদিও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দাবি করেছে, দেশটিতে ২১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ইরানের নারী ও পরিবার বিষয়ক ভাইস-প্রেসিডেন্ট মাসুমে এবতেকারও আছেন বলে দেশটির গণমাধ্যমগুলো নিশ্চিত করেছে।

এর বাইরে জাপানে ১১ জন, হংকং ও ফ্রান্সে দুজন করে এবং ফিলিপাইন ও তাইওয়ানে একজন করে মানুষের মৃত্যু হয়েছে। চীনের বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে এখন মোট আক্রান্তের এক তৃতীয়াংশে দাঁড়িয়েছে।

এদিকে, করোনাভাইরাস আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা কোনো ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। বরং তারা বিনিয়োগ করা টাকা তুলে নিতে চাইছেন। ফলে টানা পাঁচ দিন ধরে টানা দরপতনের ধারায় রয়েছে শেয়ারবাজার। চীনের বাইরে গোটা বিশ্বে এ সংক্রমণ যেভাবে ছড়াচ্ছে তাতে আগামী দিনগুলোতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.