আপনি পড়ছেন

মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইনে আরেকটি গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। এতে ওই গ্রামের প্রায় চার শ বাড়ির মধ্যে দুই শতাধিক বাড়ি পুড়ে গেছে। এ ছাড়া সেনারা দুই জনকে গুলি করে হত্যা করেছে এবং একজনকে ধরে নিয়ে গেছে। এ অবস্থায় অনেকেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা এসব অভিযোগ করেছেন। তবে বার্মিজ (মিয়ানমারের পুরনো নাম) আর্মি বরাবরের মতো অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

myanmar army member rakhainমিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্য

ওই গ্রামের বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে দ্য ইরাওয়াদ্দি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ভুক্তভোগীদের আত্মীয়-স্বজনের বরাত দিয়ে এতে বলা হয়, পশ্চিম রাখাইনের কিউকতাও এলাকার ফিয়াপং নামের ওই গ্রামটি জ্বালিয়ে দেওয়ার আগে গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে সেনারা গুলি ছোড়ে। এতে দুই বাসিন্দা প্রাণ হারায়। এর পর গ্রামটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় মিয়ানমারের সেনারা। 

ভুক্তভোগী ২৭ বছর বয়সী কো মং নিন্ত উইনের বাবা ইউ নিও মাং হ্লা বলেন, তার ছেলে মোটরসাইকেলে করে কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিল। পথে বিকেল ৫টার দিকে কিউকতাওয়ে সেনাদের সস্মুখে পড়ে যায় সে। এ সময় সেনারা তাকে পথ দেখিয়ে দিতে বলে। গ্রামের কাছাকাছি পৌঁছলে একটি বিস্ফোরণ ঘটে। এর পর গ্রামে হামলা চালায় সেনারা।

rakhain village myanmarআরেকটি গ্রাম জ্বালিয়ে দিলো মিয়ানমারের সেনাবাহিনী

তিনি বলেন, সেনাদের ট্রাকগুলো এর পর পরই পুরো গ্রাম ঘিরে ফেলে। এর পর গ্রামের লোকজনকে ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে বলা হয়। এর পর সেনা সদস্যরা গ্রামের বাসিন্দাদের মালামাল লুটপাট করে এবং আগুন ধরিয়ে দিয়ে বাড়িগুলো জ্বালিয়ে দেয়।

ইউ নিও মাং হ্লা আরো বলেন, ‘গুলি করার পর তারা কিছুক্ষণের জন্য থামে। এর পর ট্রাকগুলো গ্রামে ঢোকে এবং আমাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে বলা হয়। আমরা দেখতে পাই, তারা আমাদের মালামাল লুটপাট করছে এবং সেগুলো দিয়ে ট্রাক ভরছে। এক পর্যায়ে আমি তাদের কাছাকাছি চলে যাই, কিন্তু তারা আমাকে লক্ষ্য করে একটি ফাঁকা চালায় (সতর্ক করতে)। বাড়িঘর ছেড়ে আমাদের চলে যেতে বাধ্য করা হয়। এর পর তারা সেগুলো জ্বালিয়ে দেয়।

ইউ স্যান তুন হ্লা নামের আরেক গ্রামবাসী বলেন, ওই প্রায় ৪০০ বাড়িঘর ছিল, এর মধ্যে ২০০টিরও বেশি বাড়িঘর তারা আগুনে পুড়ে ছাই করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, আমার মনে হয়, দুই শতাধিক বাড়িঘর জ্বালিয়ে ছারখার করে দেয়া হয়েছে। আমরা আর সেটার তালিকাও করতে পারব না। অনেক গ্রামবাসী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তবে কিছু ঘর পুড়ে যায়নি এ জন্য যে, সেনারা চলে যাওয়া মাত্রই লোকজন এসে আগুন নিভিয়ে ফেলেন। যদিও সেনারা বলেছিল, কেউ যদি আগুন নেভানোর চেষ্টা করে, তাহলে তাকে গুলি করা হবে। এমনকি তারা (সেনা) আবারো ফিরে এসে আগুন দিতো যদি বাড়িঘর পুড়ে না যেত।

আরেক ভুক্তভোগীর নাম কো খিন মং থেইন। ৩২ বছর বয়সী ওই যুবক তার ঘরে লুকিয়ে ছিল, কিন্তু মিয়ানমার সেনারা তাকে ধরে নিয়ে যায়।

তবে এসব হামলা ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ অস্বীকার করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তাতমাদোর (সেনাবাহিনী) মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন দাবি করেছেন, ওই গ্রামের কাছে সেনাদের লক্ষ্য করে রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে দুই জনের লাশ ও বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে।

এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কিওকতাও ও আপাওকয়ের মধ্যে পুলিশের ভ্যানকে লক্ষ্য করে আরাকান আর্মি দূর নিয়ন্ত্রিত বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়। তাদেরকে নিয়ে যাওয়ার সময় একই স্থানে দ্বিতীয়বার হামলা চালানো হয়।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.