চীন-তাইওয়ানের মধ্যে নজিরবিহীন উত্তেজনা
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত তাইওয়ানকে নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করে আসছে চীন। অঞ্চলটিতে সম্প্রতি সামরিক তৎপরতা জোরদার করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপকূলীয় এলাকায় বিপুলসংখ্যক সেনা ও অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র মোতায়েন করে বেইজিং।
এমন প্রেক্ষাপটে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা জোনের আকাশসীমায় গতকাল শনিবার ৮টি বোমারু বিমান ও ৪ টি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে চীন। বোমারুগুলো পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম এইচ-৬কে মডেলের। এতে দেশ দুটির মাঝে নতুন করে সামরিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, চীনা সামরিক বিমানগুলো তাদের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ওই অঞ্চলে বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, দক্ষিণ চীন সাগরে তাইওয়ানের প্রতাস দ্বীপপুঞ্জ অবস্থিত। এটি ছাড়াও তাইওয়ানের দক্ষিণাঞ্চলের পানিসীমায় সাম্প্রতিক সময়ে নিয়মিত বিমান ওড়াচ্ছে চীন।
এতদিন একটি বা দুটি বিমান ওড়ানো হলেও গতকালের মিশনে মোট ১২টি সামরিক বিমান অংশ নেয়। নজিরবিহীন ও অস্বাভাবিক এই ঘটনায় দেশ দুটির মধ্যে চলমান উত্তেজনা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
একটি মানচিত্র দেখিয়ে তাওয়ান বলছে, অতীতে যেসব এলাকা দিয়ে চীনা বিমানগুলো ওড়ানো হয়েছে, একই স্থান দিয়ে সর্বশেষ এই অভিযান চালানো হয়। ওই এলাকায় নজরদারি করতে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে। সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে বিমান বাহিনীকে।
চীনা শক্তি প্রদর্শনের এই তৎপরতা এমন এক সময় ঘটলো, যখন সবেমাত্র ক্ষমতায় বসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ফলে এটিকে বাইডেনকে চীনের ‘শক্তি দেখানো’ হিসেবেও দেখছেন কেউ কেউ।
এর আগে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, তাইওয়ান উপকূলে পুরনো ডিএফ-১১এস ও ডিএফ-১৫এস মিসাইল সরিয়ে অত্যাধুনিক ডিএফ-১৭ হাইপারসনিক মিসাইল বসিয়েছে চীন। এ মিসাইল অনেক দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে সক্ষম। তার আগে উপকূলীয় এলাকায় বিপুলসংখ্যক সেনা মোতায়েন ও অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র পাঠায় দেশটি।
গত বছরের মাঝামাঝি সেনাবাহিনীকে ‘যুদ্ধের জন্য মানসিক প্রস্তুতি’ নিতে বলেছিলেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এর পরই তাইওয়ানকেন্দ্রিক চীনা সেনাদের তৎপরতা দৃশ্যত বেড়ে যায়। গত ১৮-১৯ সেপ্টেম্বর চীন-তাইওয়ান সীমান্তে প্রায় ৪০টি চীনা যুদ্ধবিমান উড়েছিল। এটিকে দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য বিপদ সংকেত বলে বর্ণনা করেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন।
চীনা হুমকি মোকাবেলায় তাইওয়ানকে উপকূলীয় প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ১০০ হারপুন দেয়ার উদ্যোগ নেয় বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বোয়িং নির্মিত ২৩৭ কোটি ডলারের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তাইওয়ানের কাছে বিক্রির অনুমোদন দেন তিনি। উভয় দেশের মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তিও সই হয়।
উপগ্রহ চিত্রের বরাত দিয়ে কানাডার কানওয়া ডিফেন্স রিভিউ জানায়, হঠাৎ করেই চীন ফুজিয়ান-গুয়ানডংয়ে মেরিন কর্পস ও রকেট ফোর্সের পরিকাঠামো শক্তিশালী করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে তাইওয়ানের পার্শ্ববর্তী এলাকায় সামরিক তৎপরতা বাড়িয়েছে চীন। এমনকি প্রয়োজনে সেখানে হামলার চালানো হতে পারে বলেও কিছুদিন আগে বলা হয়েছিল।
এসব ঘটনা তাইওয়ানে হামলার চীনা প্রস্তুতি হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। কেননা, ওই অঞ্চলটিকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে আসছে চীন। সেখানে ইদানিং মার্কিন তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় সেনা অভিযান চালিয়ে দখলে নেয়ার কথা ভাবছে বেইজিং।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.
360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.
Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.