বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারি জীবনযাপনের চিত্র বদলে দিয়েছে। বদলে গেছে অর্থনীতি। করোনার চোখ রাঙানি চীনকে এখনও ক্ষতবিক্ষত করে চলেছে। গত এপ্রিল মাসে চীনের বেকারত্বের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬.১ শতাংশ। অথচ মহামারির যৌবনকাল ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৬.২ শতাংশ। দেশটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। কিন্তু কোভিড-১৯ তাতে মন্থর গতি এনে দিয়েছে। বিবিসি।
চীনে ফের রেকর্ড বেকারত্ব, মন্থর অর্থনীতি
সরকারি পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে, খুচরা বিক্রেতা এবং উৎপাদনকারীরা লকডাউনে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাণিজ্যিক কেন্দ্র সাংহাইয়ের দীর্ঘ শাটডাউনসহ মার্চ এবং এপ্রিলে কয়েক ডজন শহরে সম্পূর্ণ বা আংশিক লকডাউন আরোপ করা হয়। ফলে চীনের অর্থনীতির গতি মন্থর হয়ে গেছে।
২০২০ সালে চীনে করোনাভাইরাসের সবচেয়ে প্রাদুর্ভাব ঘটে। তবে চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং সম্প্রতি দেশের কর্মসংস্থান পরিস্থিতিকে ‘জটিল এবং ভয়াবহ’ বলে বর্ণনা করেছেন। এর মূল কারণ বিধিনিষেধ। তবুও সরকারের লক্ষ্য ছিল, এ বছর বেকারত্বের হার ৫.৫ শতাংশের এর নিচে রাখা। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। চীনের অর্থনীতিতে লকডাউনের প্রভাব পড়ার কারণে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চীনের ন্যাশনাল ব্যুরো অফ স্ট্যাটিস্টিক্সের তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালের মার্চ মাসের পর থেকে খুচরা বিক্রয়ে সবচেয়ে বড় সংকোচন হয়েছে। গত বছরের এপ্রিলের চেয়ে এ বছরের এপ্রিলে বিক্রি ১১.১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। একই সময়ে শিল্প উৎপাদন এক বছরের আগের তুলনায় ২.৯ শতাংশ কমেছে। কারণ লকডাউনে সরবরাহ লাইনে ধস নেমেছিল।
এদিকে আগামী ১ জুন থেকে কিছুটা হলেও স্বাভাবিক জীবন ফিরে আসার পরিকল্পনা রয়েছে সাংহাই কর্তৃপক্ষের। ছয় সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা লকডাউনের সমাপ্তি ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সাংহাইয়ের ডেপুটি মেয়র জং মিং বলেছেন, শহরের আর্থিক, উৎপাদন এবং বাণিজ্য কেন্দ্র পুনরায় পর্যায়ক্রমে খুলে দেওয়া হবে। লকডাউন ধীরে ধীরে শিথিল করা হচ্ছে। সংক্রমণ বৃদ্ধি রোধ করতে ২১ মে পর্যন্ত চলাচলের সীমাবদ্ধতা অনেকাংশে বহাল থাকবে।
সাংহাইর কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের বাইরে সম্প্রতি নতুন কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়নি। যদিও রাষ্ট্রীয় মিডিয়া জানিয়েছে, করোনা যে কোনো সময় ফিরে আসতে পারে। তবে নিশ্চিত কিনা যাচাই করা কঠিন।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, মানুষ এখনও ঘরে বন্দি। চলাফেরায় এখনও কিছু স্থানে আগের মতোই নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবার স্থানগুলোতে প্রবেশাধিকারও সীমিত রয়েছে। কিছু কিছু দোকান খুলছে। চালু হচ্ছে অফলাইন ব্যবসা। তবে সবাই মনের মতো করে ঘুরে বেড়াবে তেমন অবস্থা এখনও হয়নি।