ফ্রান্স, স্পেন ও ইতালির অর্ধশতাধিক কূটনীতিক বহিষ্কার করেছে রাশিয়া। এসব দেশের নেতাদের ‘উসকানিমূলক’ ও ‘অবন্ধুসুলভ’ আচরণের জবাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে বহিষ্কৃত রুশ কূটনীতিকদের এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোতে পদায়ন করার কথা জানিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ফ্রান্সের ৩৪, স্পেনের ২৭ ও ইতালির ২৪ কূটনীতিককে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের দুই সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়া ছাড়তে বলা হয়েছে।
এর আগে দুপুরে মস্কোতে নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত পিয়েঘ লেভিকে তলব করে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ফ্রান্সে রাশিয়ার কূটনৈতিক মিশনগুলোর ৪১ কর্মীকে বহিষ্কারের বিষয়টি ‘উসকানিমূলক’ ও ‘ভিত্তিহীন’। এ ধরনের পদক্ষেপ রাশিয়া-ফ্রান্স সম্পর্ক ও গঠনমূলক দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার জন্য হানিকর।
পৃথক বিবৃতিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতালি ও স্পেনের যথাক্রমে ২৪ জন ও ২৭ জন কূটনীতিককে বহিষ্কারের কথা জানিয়েছে।
রাশিয়ার পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, রাশিয়া থেকে ফরাসি কূটনীতিকদের বহিষ্কারের কঠোর নিন্দা জানাচ্ছে ফ্রান্স। এ সিদ্ধান্তের কোনো আইনি ভিত্তি নেই কারণ রাশিয়ায় ফরাসি দূতাবাসের কর্মীদের কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে ভিয়েনা কনভেনশনের রূপরেখার আওতায় পরিচালিত হয়।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি রাশিয়া থেকে তার দেশের কূটনীতিক বহিষ্কারের বিষয়টিকে ‘বৈরী পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেছেন। রোমে সফররত ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সানা মারিনের সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, রাশিয়ার এ সিদ্ধান্ত স্পষ্টত একটি বৈরী পদক্ষেপ এবং এর আগে আমাদের গৃহীত পদক্ষেপের জবাব। তবে যে কোনো পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক যোগাযোগের পথ খোলা রাখতে হবে কারণ ইউক্রেনে শান্তি আনা সম্ভব হলে সেটা কূটনৈতিক যোগাযোগের মাধ্যমেই হবে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে ফ্রান্স, ইতালি, স্পেনসহ ইউরোপের দেশগুলো তিন শতাধিক রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে। জবাবে রাশিয়া গত মাসে পোল্যান্ডের ৪৫ ও জার্মানির ৪০ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে। এর আগে ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, রোমানিয়া, সুইডেন, জাপান, নরওয়েসহ বেশ কয়েকটি দেশের বিরুদ্ধে একইরকম পাল্টা পদক্ষেপ নেয় রাশিয়া।
ইউরোপ থেকে বহিষ্কৃত রুশ কূটনীতিকদের এশিয়া, আফ্রিকা ও অন্যান্য অঞ্চলের রুশ দূতাবাস ও কনসুলেটগুলোতে পদায়ন করার কথা জানিয়েছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তিনি বলেছেন, ইউরোপ এমনিতেই গুরুত্ব হারিয়েছে। বৈশ্বিক শক্তি ও ব্যস্ততা এখন এশিয়া ও আফ্রিকার দিকে ধাবিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ইউরোপ থেকে বহিষ্কৃত রুশ কূটনীতিকরা বসে নেই। এরইমধ্যে তারা এশিয়া ও আফ্রিকার মিশনগুলোতে যোগ দিচ্ছেন। আমরা এসব মিশনে জনবল জোরদার করব।