চরম সংকটে স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়ে গেছে। চলছে না সরকারি অফিস। নতুন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, চরম খাদ্যসংকটে আছে শ্রীলঙ্কা। আমরা মরতে বসেছি। এরইমধ্যে শুক্রবার ৯ জন মন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। ত্রাণ কার্যক্রমবিষয়ক সমন্বয়কের দায়িত্ব পেয়েছেন মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ। ডেইলি মিরর, এএফপি।
বিপর্যস্ত-নাকাল শ্রীলঙ্কা, দায়িত্বে মালদ্বীপের নাশিদ
মন্ত্রীসভার নতুন ৯ সদস্যকে শুক্রবার শপথবাক্য পাঠন করান প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। বন্দর, নৌ ও বেসামরিক সেবাবিষয়ক মন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন নিমাল সিরিপালা ডি সিলভা। শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন সুশীল প্রেমাজায়ান্থা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন কেহেলিয়া রামবুকওয়েলা।
আইন, কারাগার ও সংবিধান সংশোধনবিষয়ক মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছেন বীজেয়াদাসা রাজাপাকসে। পর্যটন ও ভূমিবিষয়ক মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছেন হারিন ফার্নান্দো। প্লান্টেশন ইন্ডাস্ট্রিজ মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পেয়েছেন রমেশ পাথিরানা। শ্রম এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থানবিষয়ক মন্ত্রী হয়েছেন মানুশা নানায়েক্কারা। ট্রেড, কমার্স ও খাদ্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পেয়েছেন নলিন ফার্নান্দো। জননিরাপত্তার দায়িত্ব পেয়েছেন তিরান অ্যালেস।
মোহাম্মদ নাশিদকে ত্রাণ সমন্বয়ক নিয়োগ
শ্রীলঙ্কার জন্য ত্রাণ তৎপরতার সমন্বয়ক হিসেবে মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও স্পিকার মোহাম্মদ নাশিদকে নিযুক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। বৃহস্পতিবার তাদের মধ্যে রাজধানী কলম্বোতে আলোচনা হয়। এরপরই এমন ঘোষণা দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে বলা হয়েছে, আলোচনাকালে মোহাম্মদ নাশিদ শ্রীলঙ্কার জন্য ত্রাণ সহায়তায় সহযোগিতার প্রস্তাব দেন। মালদ্বীপের সাবেক এই প্রেসিডেন্টের প্রস্তাব মেনে নেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী। অর্থনৈতিক সংকটের সময়ে শ্রীলঙ্কাকে সমর্থন দেওয়ার জন্য নাশিদকে এ সময় ধন্যবাদ জানান রনিল বিক্রমাসিংহে।
তীব্র জ্বালানি সংকটে শ্রীলঙ্কা
এ সংকট মোকাবেলায় জরুরি পদক্ষেপ নিয়েছে লঙ্কান সরকার। এর অংশ হিসাবে সরকারি কর্মকর্তাদের ‘ছুটি’ ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জরুরি পরিষেবার অংশ নন, এমন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিসে না আসার নির্দেশ দিয়েছে গোতাবায়া রাজাপাকসের সরকার। বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল।
শ্রীলঙ্কা এখন প্রায় পেট্রোলশূন্য এবং অন্যান্য জ্বালানিরও রয়েছে তীব্র ঘাটতি। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে জ্বালানি, গ্যাস এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমদানির জন্য অর্থের যোগান পেতে সরকার সংগ্রাম করছে। বিপরীতে দেশজুড়ে প্রতিবাদ ও অস্থিরতা চলছে। গ্যাস ও জ্বালানির দাবিতে বিক্ষোভকারীরা প্রধান সড়ক অবরোধ করেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে পর্যাপ্ত জ্বালানি সরবরাহ করতে না পারায় কর্তৃপক্ষ সারাদেশে দিনে চার ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বন্ধ ঘোষণা করেছে।
এদিকে খাদ্য ঘাটতির বিষয়ে বিশেষ সতর্কবার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। পাশাপাশি বলেছেন, উৎপাদন বাড়াতে পরবর্তী রোপণ মৌসুমের জন্য পর্যাপ্ত সার কেনা হবে। এক টুইটে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেপ্টেম্বর-মার্চ মৌসুমের জন্য পর্যাপ্ত সার মজুত নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।