ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর প্রায় তিনমাস সময় অতিবাহিত হয়েছে। দুই পক্ষই বিপুল পরিমাণ ক্ষতির মুখোমুখি হলেও যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় নতুন ধরনের লেজার অস্ত্র প্রয়োগের দাবি করছে রাশিয়া, যা দিয়ে শত্রুপক্ষের ড্রোন মুহূর্তের মধ্যে পুড়িয়ে ফেলা যায়, দেড় হাজার কিলোমিটার দূরের উপগ্রহকে অন্ধ করে দেওয়া যায়। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলছেন, পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে উপনীত হওয়ার কারণে রাশিয়া এমন অদ্ভুত অস্ত্রের কথা জাহির করছে। খবর রয়টার্স।
ফাইল ছবি
রাশিয়ার সামরিক বিভাগের উন্নয়নের দিকগুলো দেখাশুনা করা যার দায়িত্বে, সেই উপ-প্রধানমন্ত্রী ইউরি বোরিসভ জানিয়েছেন, তারা ইউক্রেনে নতুন ধরনের এক লেজার অস্ত্রের পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন। এই অস্ত্র দিয়ে খুব সহজেই পাঁচ কিলোমিটার দূরের ড্রোনকে ধ্বংস করা সম্ভব। শুধু তাই নয়, পৃথিবীর ১৫০০ কিলোমিটার উপর থাকা কৃত্রিম উপগ্রহকে অচল করতেও সক্ষম ‘দ্য পেরেসভেট সিস্টেম’ নামের নতুন এই লেজার অস্ত্র। রাশিয়ার সামরিক বাহিনীকে এই অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, ‘দ্য পেরেসভেট সিস্টেম’র নাম দেওয়া হয়েছে রাশিয়ার মধ্যযুগীয় সন্ন্যাসী আলেকজাণ্ডার পেরেসভেটের নামে। যিনি যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াই করতে গিয়ে মারা যান। বোরিসভ জানান, এই অস্ত্র পদার্থবিদ্যার সম্পূর্ণ নতুন তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। আমাদের বিজ্ঞানীরা এই উন্নত অস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।
উপ-প্রধানমন্ত্রী ইউরি বোরিসভ
২০১৮ সালে রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, পানির নিচের পারমাণবিক ড্রোন, একটি সুপারসনিক অস্ত্র ও একটি লেজার অস্ত্র উন্মোচন করেছিলেন।
উপ-প্রধানমন্ত্রী ইউরি বোরিসভ মস্কোতে এক সম্মেলনে বলেন, পেরেসভেট ইতোমধ্যে ব্যাপকভাবে মোতায়েন করা হচ্ছে। ইউক্রেনে এই ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে বোরিসভ বলেন, হ্যাঁ। প্রথম প্রোটোটাইপ সেখানে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এদিকে ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার লেজার অস্ত্রের খবরে উপেক্ষার হাসি হেসেছেন। এক ভিডিও ভাষণে তিনি বলেন, নাৎসি জার্মানিরা যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজয় মুখে গিয়ে উপনীত হয়েছিল, তখন তারা একটি আশ্চর্যজনক অস্ত্র সম্পর্কে প্রচার চালাতে থাকে, যা যুদ্ধের জন্য টার্নিং পয়েন্ট হবে। আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি, হামলার তৃতীয় মাসে এসে রাশিয়া তার ‘আশ্চর্য অস্ত্র’ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। এর মাধ্যমে আসলে রাশিয়ার ব্যর্থতাই ফুটে উঠছে।