একজন শিল্পীর আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করে ভক্তদের ভালোবাসা। পর্দায় বা কাগজে শিল্পীদের দেখে, জেনে, দূর থেকে অন্ধের মতো ভালোবাসা একধরণের যোগহীন সম্পর্ক। কেউ দেয়ালে টাঙিয়ে দেন মস্ত এক পোস্টার। রোজ সকালে ঘুম ভাঙে প্রিয় শিল্পীর মুখ দেখে। কেউ হয়তো মানিব্যাগের ফ্রন্টপকেটে বয়ে বেড়ান তাকে। অধিকাংশ সময় এতোসব ভক্তদের ভালোবাসার খবর শিল্পীদের কাছে থেকে যায় অজানা। বিদেশি শিল্পীদের জন্য ভক্তদের ভালোবাসা কতোভাবেই না প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের কোন শিল্পীর জন্য বিদেশী ভক্তদের ভালোবাসা কেমন! তবে কাল সন্ধ্যায় কী ঘটলো বলি, শুনুন।

mosarraf karim

মোশাররফ করিম, তার স্ত্রী রোবেনা রেজা জুঁই, পরিচালক মুরসালিন শুভ, অঞ্জন ও তমাল গিয়েছেন উত্তরার একটি রেস্টুরেন্টে। কাল সন্ধ্যায় একটি ঘরোয়া পার্টির আয়োজন করা হয়েছিল সেখানে। মোশাররফ করিমের এক ভক্ত কলকাতা থেকে বাংলাদেশে এসেছেন শুধুমাত্র তার সঙ্গে দেখা করবেন বলে। সেই রেস্টুরেন্টেই তার আসার কথা। ভক্তের নাম অভিজিৎ দত্ত। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.কম করেছেন তিনি।

মোশাররফ রেস্টুরেন্টের টেবিলে বসার পর থেকেই শুরু হয়েছে উঁকিঝুকি। অনেকেই কাছে গিয়ে কথা বলছেন, অটোগ্রাফ নিচ্ছেন। ছবি তুলতে চাইলে মোশাররফ বরাবরের মতো না বলেন। এমন সময় হঠাৎ আবির্ভাব ঘটলো সেই ভক্তের। কিন্তু একি! প্রিয় শিল্পীকে চোখের সামনে পেয়ে অঝোরে কেঁদে ফেললেন অভিজিৎ। তাও ভালো কিন্তু এবার তো কান্না থামবে! না, সে নামগন্ধ নেই। কাঁদছেন তো কেঁদেই চলেছেন। যারা বিষয়টি বুঝতে পারছিলেন না তারা কৌতূহলী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। যারা বুঝে গেছেন তাদের কারো চোখে ধুলো পড়েনি। কান্না একটি সংক্রামক ব্যাধি, কাজেই সংক্রমিত হয়েছে মোশাররফের স্ত্রী জুঁই আর উপস্থিত সকলের মাঝে। এই কান্না কষ্টের নয়, অসঙ্গায়িত এক ভালোলাগার।

কিন্তু এমন নিদারুণ ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশে হতবাক মোশাররফ। ভক্তকে শান্ত করতে হেসে বললেন, 'কেঁদে তো সব ভাসিয়ে দিলে। এবার একটু হাস। এই দেখ, কী এনেছি তোমার জন্য।' মোশাররফের মুখে এমন কথা শুনে চোখ মুছতে মুছতে মুখ তুলে তাকালেন অভিজিৎ। একটু হাসলেন। মোশাররফ ভক্তের জন্য তার অটোগ্রাফ দেয়া টি-শার্ট এনেছিলেন, সেটা বাড়িয়ে দিলেন। অভিজিতের আনন্দ তখন বাঁধনহারা। তিনিও মোশাররফের জন্য আনা উপহার এগিয়ে দিলেন। সেখানে রয়েছে একটি ঘড়ি আর ছবি বাঁধাই করা পাথরের একটি ফ্রেম। এরপর ভক্তকে নিয়ে মোশাররফ রেস্টুরেন্টের বাইরে গেলেন কথা বলতে। খানিক স্বাভাবিক হয়ে ফিরে এলেন দুজনই।

অভিজিৎ বললেন, '২০০৮ সাল থেকে আমি বাংলাদেশের নাটক দেখি। মোশাররফ দাদা’র অভিনয় দেখে আমার কখনও অভিনয় মনে হয় না। মনে হয় দৃশ্যগুলোতে দাদার চরিত্রে আসলে আমি অভিনয় করছি। তাকে পর্দায় দেখলেই আমি পাগল হয়ে যাই। তিনি আমার জন্য ভগবানের সমান।'

একটু থেমে আবার শুরু করেন, 'আমি সবাইকে শুধু মোশাররফ দাদার নাটক দেখতে বলি। আমার গ্রাম নদিয়াতে তার প্রচুর ভক্ত রয়েছে। তাদের সবাই নিয়মিত মোশাররফ দাদার’র নাটক দেখে। শুধু তাই নয়, কলকাতা থেকে শুরু করে আসাম, বর্ধমান, চব্বিশ পরগণাসহ ভারতের সব বাঙালী মোশাররফ করিমকে চেনেন।'

বাংলাদেশের এমন কতো দেশি-বিদেশী ভক্ত রয়েছে তার হিসেব অজানাই থেকে যাবে। কিন্তু মনের জায়গাটিতে পুষে রাখার জন্য শিল্পীদের কাছে ভক্তদের একমাত্র দাবী হয়তো মানসম্মত কাজ।

আপনি আরও পড়তে পারেন

চোর নিয়ে গেল ‘দেবতা’র চুল!

রেকর্ড: পোশাকের দাম ৩৮ কোটি টাকা

পুনর্জন্মে বিশ্বাসী কিশোরীর মৃতদেহ সংরক্ষণের পক্ষে আদালতের রায়

নিজের কবর নিজেই খুঁড়েছেন ৯০ বছরের জিমি

রাজমিস্ত্রির অ্যাকাউন্টে একদিনে ৬২ লাখ টাকা!

Discover extraordinary stories from around the world with our exceptional news coverage. From uplifting human interest stories to groundbreaking scientific discoveries, we bring you the best of the best. Stay informed about the latest breakthroughs in technology, medicine, and beyond, and explore the world's most fascinating cultures and communities. Get inspired and informed with our exceptional news coverage.