পান বা না পান, কিছু কিছু মানুষের নেশা, পৃথিবীর নানা প্রান্ত গুপ্তধনের সন্ধানে চষে বেড়ানো। তা সে পানির নীচেই হোক বা সমতল। ডুবুরি টমি জি. থম্পসন সে দলেরই একজন। এই নেশাই তাঁর কাল হল। ঘটনা খোলাসা করা যাক।

treasure trove

১৮৫৭ সাল, সাউথ ক্যারোলাইনা সাগরে, ৪২৫ জন যাত্রীসহ একটি জাহাজ সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়ে ডুবে যায়। এই জাহাজেই অল্প-স্বল্প সোনা নয়, একেবারে তিন টন সোনা ছিল। এই গুপ্তধনের খোঁজে অনেকে সাউথ ক্যারোলাইনার সমুদ্র তলদেশ চষে বেড়ালেও সম্প্রতি থম্পসন সেই গুপ্তধনের সন্ধান পেয়েছেন। এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুপ্তধন উদ্ধারের অভিযানে থম্পসনকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন তাদের ঠকিয়ে একাই সোনাগুলো হাতিয়ে নিতে চেয়েছেন বলে পেশায় ডুবুরি এই মার্কিনির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি সোনাগুলো কোথায় আছে তাও বলতে নারাজ তিনি। এই অভিযোগের ভিত্তিতে থম্পসনকে ওহাইও কারাগারে রাখা হয়েছে। সোনার খোঁজ না দেয়া পর্যন্ত তিনি কারাগারেই থাকবেন।

অনেকেই চেষ্টা করেও তিন টন সোনা যখন উদ্ধারে সফল না হয়ে হতাশ ঠিক তখনই গুপ্তধন খোঁজের নেশায় বিভোর থম্পসন কাজে নেমে পড়েন। প্রথমে কয়েক বছর সময় ধরে ডুবে যাওয়া জাহাজটি সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করে জাহাজের গতিপথ এবং গুপ্তধনের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হন থম্পসন। এই সোনা উদ্ধারে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হবে ফলে তিনি পৃষ্ঠপোষক খুঁজতে থাকেন। একে একে ১৬০ জন পৃষ্ঠপোষক জোগাড়ও করে ফেলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পৃষ্ঠপোষক জানান, সোনা উদ্ধারের বিষয়ে থম্পসন যথেষ্ট উদ্যোগী ছিলেন। তিনি মেধাবীও ছিলেন। কারণ সমুদ্রের তলদেশে সোনা উদ্ধারের জন্য ‘নিমো’ নামের একটি ডুবুরি রোবটও তৈরি করেছিলেন তিনি। ‘নিমো’ নামের রোবটটি আট হাজার ফুট নীচে যেতে সক্ষম। ওই পৃষ্ঠপোষক আরও বলেন, সোনা উদ্ধারে বিনিয়োগের মুনাফা হিসেবে থম্পসনের কাছে তিনি ১০ মিলিয়ন ডলার পাওয়ার কথা। তাঁরা বিশ্বাস, থম্পসন শত শত মুদ্রা সরিয়ে ফেলেছেন বা সন্তানের ট্রাস্ট অ্যাকাউন্টে রেখেছেন।

২০০০ সালে অভিযানের বড় দুই পৃষ্ঠপোষক থম্পসনের বিরুদ্ধে আদালতে যান। অভিযোগ, পৃষ্ঠপোষকদের অজান্তে থম্পসন কিছু স্বর্ণ মুদ্রা বিক্রি করেছেন। তাঁর উদ্দেশ্য, পুরো সোনা একাই হাতিয়ে নেয়া। পৃষ্ঠপোষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১২ সালে আদালতের বিচারক থম্পসনকে আদালতে হাজিরা দেয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু আদালতে হাজিরা না দেয়ায় থম্পসনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলে তিনি নিরুদ্দেশ হয়ে যান। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে থম্পসনের প্রেমিকার মাধ্যমে খোঁজ পেয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে গ্রেপ্তারের পর ওই সোনার সন্ধান আদালত জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দিতে রাজি হননি। তাঁর আইনজীবী বলছেন, কাউকে সোনার মুদ্রা দেয়ার কথা টমি জি. থম্পসন মনে করতে পারছেন না। অন্যদিকে আদাললের ভাষ্য, টমি স্মৃতি বিভ্রমের ভান করছেন।

উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে থম্পসন ওই জাহাজের খোঁজ পান। সেখানেই সোনা ও পুরোনো মুদ্রা পান। তবে তিনি সব সোনা উদ্ধার করতে পারেননি। তারপরও, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এই সোনাগুলোকেই সবচেয়ে বেশি পরিমাণে পাওয়া গুপ্তধন বলা হচ্ছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

পেটের ভিতর পাওয়া গেল প্রায় ১২ হাজার পাথর!

সার্কিট বোর্ডে পাওয়া যাবে সোনা!

যশোরের ‘পাখির বাসা’ এখন ইউরোপে

এবার দেখা যাবে গর্ভের সন্তানের বেড়ে ওঠা!

লেকের পানি উড়ছে আকাশে!

Discover extraordinary stories from around the world with our exceptional news coverage. From uplifting human interest stories to groundbreaking scientific discoveries, we bring you the best of the best. Stay informed about the latest breakthroughs in technology, medicine, and beyond, and explore the world's most fascinating cultures and communities. Get inspired and informed with our exceptional news coverage.