আজ ১২-ই রবিউল আউয়াল (১৩ নভেম্বর, মঙ্গলবার), পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.)। আজ সর্বশ্রেষ্ঠ মানব ও শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সা.)-এর পবিত্র জন্ম দিবস। দিনটি বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের নিকট অতি তাৎপর্যপূর্ণ। মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে দিবসটি পালিত হচ্ছে। আজ সরকারি ছুটির দিন।
পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উপলক্ষে তাৎপর্যপূর্ণ বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে দেশের জাতীয় দৈনিকগুলো। বিশেষ অনুষ্ঠামালা প্রচার করছে বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন চ্যানেলগুলো।
দেশব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্যে থাকছে যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মহানবী (সা.)-এর জীবনকাহিনী আলোচনা, সভা-সমাবেশ, মসজিদে মসজিদে মিলাদ মাহফিল, বিশেষ মোনাজাতসহ নানা ধর্মীয় আয়োজন।
পবিত্র এই দিনটিকে সামনে রেখে ইসলামিক ফাউন্ডেশন গত সোমবার থেকে ১৫ দিন ব্যাপী নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে থাকছে ওয়াজ মাহফিল, সেমিনার, ইসলামিক ক্যালিগ্রাফি, মহানবী (সা.)-এর জীবনভিত্তিক পোস্টার এবং বই প্রদর্শনী, ইসলামিক বই মেলা, ইসলামিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কবিতা পাঠের আসর। পাশাপাশি ১২ ডিসেম্বর থেকে ২৬ ডিসেম্বর বাদ মাগরিব জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পূর্ব চত্বরে প্রতিদিন ওয়াজ এবং মিলাদ মাহফিল আয়োজন করা হবে।
আরবি হিজরি ৫৭০ সনের আজকের এই দিনে রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে মক্কায় মা আমিনার কোলজুড়ে পৃথিবীতে আসেন হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সা.)। তাঁর ৬২ বছরের বর্ণাঢ্য কর্মজীবন এবং তাঁর প্রচারিত ইসলামের বাণীই আজ মানবতার মুক্তির অবলম্বন।
ইসলাম ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ কোরআনে বলা হয়েছে, সমগ্র মানবজাতির রহমত স্বরূপে হযরত মুহম্মদকে (স.) প্রেরণ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ নিজেই বলেছেন, 'মুহম্মদ (স.)কে সৃষ্টি না করলে পৃথিবীকে সৃষ্টি করতাম না।' পবিত্র এই দিনে মসজিদে মসজিদে উচ্চারিত হবে, ‘বালাগালউলা বি-কামালিহি, কাসাফাদদুজা বি-জামালিহি, হাসানাত জামিউ খেসালিহি সাল্লু আলাইহি ওয়া আলিহী।'
তবে মিলাদুন্নবী পালন করা নিয়ে কিছুটা বিতর্ক রয়েছে। 'মিলাদুন্ননবী' শব্দের অর্থ 'নবীর জন্ম'। সুতরাং শুধুমাত্র এই দিনটিকে পালনের মধ্য দিয়ে নবীজীর সুমহান আদর্শকে একদিনের মাঝে সীমাবদ্ধ না করে প্রতিটি দিনই 'সীরাতুন্নবী' অর্থাৎ 'নবীজীর জীবনচরিত' পালন ও তা নিয়ে আলোচনার পরামর্শ দেন অনেক ধর্মীয় আলেমগণ।