আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের এক মন্তব্য নিয়ে আপাতত তোলপাড় রাজনৈতিক অঙ্গন। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছিলো জাসদ, এমন মন্তব্য করে তোলপাড়ের শুরুটা করেন সৈয়দ আশরাফ। এ প্রসঙ্গে কী বলছেন প্রধানমন্ত্রী?
একটি জাতীয় দৈনিক এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে। তাতে জানানো হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিব্রত এবং বিরক্ত। একই সঙ্গে ‘এই সময়ে’ সৈয়দ আশরাফের এ ধরনের বক্তব্যে হতাশা ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
গত মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টরি বোর্ডের একটি সভা ছিলো। জাসদ নিয়ে মন্তব্য করার পর সভায় উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তবে তার কাছে মন্তব্য নিয়ে কোনো প্রশ্ন করেননি শেখ হাসিনা।
তবে সভা শুরুর আগে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সৈয়দ আশরাফুলের কাছে তার মন্তব্যের কারণ জানতে চান। উত্তরে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘বর্তমান ছাত্রলীগের মধ্যে ছাত্রলীগের ইতিহাস নিয়ে বিভ্রান্তি আছে। ব্যাপারটা দূর করতেই ইতিহাসের সত্য ব্যাপারটা আমি তুলে ধরেছি।’
এ প্রসঙ্গে পরে ওবায়দুল কাদের বলেছেন যে, সব সময় সব সত্য বলতে হয় না। সব সত্য সব সময় সময়োপযোগীও নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। তবে সৈয়দ আশরাফ বঙ্গবন্ধু হত্যার পটভূমি জাসদের তৈরি করা বলে যে মন্তব্য করেছেন, ওবায়দুল কাদের তার বিরোধিতা করেননি।
আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টরি বোর্ডের সভায় প্রধানমন্ত্রী কী বলেছেন তা নিয়ে জাতীয় দৈনিকটির সঙ্গে কথা বলেছেন সভায় থাকা চারজন নেতা। তারা জানিয়েছেন, ১৯৯৬ সালে ঐক্যের প্রয়োজনে আওয়ামী লীগ জাসদের সঙ্গে জোট করেছিলো বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। সে সময় আ স ম রব মন্ত্রী ছিলেন আর এখন হাসানুল হক ইনু মন্ত্রী; বর্তমান পরিস্থিতিতে ঐক্য দরকার। ১৪ দলের শরিকদের নিয়ে বক্তব্য দেয়ার আগে সতর্ক থাকা জরুরি বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ছাত্রলীগের এক সভায় ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিবেশ জাসদ তৈরি করেছিলো বলে মন্তব্য করেন সৈয়দ আশরাফ। জাসদের একজনকে মন্ত্রী করায় আওয়ামী লীগকে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সৈয়দ আশরাফ ইঙ্গিতে হাসানুল হক ইনুর কথা বলেন। পুরো ব্যাপারটি নিয়ে বিব্রত প্রধানমন্ত্রী বিরুক্তি ও হতাশা ব্যক্ত করেছেন।
উল্লেখ্য, পার্লামেন্টরি সভায় শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, আমির হোসেন আমু, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও শেখ সেলিম প্রমুখ। এ দিকে, বিতর্কিত ওই মন্তব্যের দুদিন পর লন্ডন সফরে গেছেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ইউরোপীয় ইউনিয়নে যুক্তরাজ্যের থাকা বা না থাকা নিয়ে ২৩ জুন একটি গণভোট হবে। সৈয়দ আশরাফ সেখানে পালন করবেন পর্যবেক্ষকের ভূমিকা।