কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন নিয়ে যত প্রশ্ন
- Details
- by জীবনশৈলী ডেস্ক
করোনাভাইরাসের প্রভাব বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ সরকারও ইতোমধ্যে ভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। এর মধ্যে বিদেশ ফেরত ও তাদের সংস্পর্শে থাকা অনেককেই কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। বাড়তি সতর্কতা হিসেবে রাজধানীসহ দেশের সব জেলা-উপজেলায় আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
কিন্তু দেশের অনেকে এখনো জানেই না কোয়ারেন্টাইন কিংবা আইসোলেশন কী। এগুলোতে কাদের রাখা হয়। কিংবা কতদিন পর্যন্ত রাখতে হবে।
কোয়ারেন্টাইন কিংবা আইসোলেশন কী?
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৪০০ শতকে ইউরোপে ব্ল্যাক ডেথ মহামারি আকার ধারণ করে। তখন ভেনিস কর্তৃপক্ষ নিয়ম জারি করে, বন্দরে কোনো যাত্রীকে নামানোর আগে জাহাজটিকে ৪০ দিন সমুদ্রে নোঙর করে রাখতে হবে। এই ৪০-কে ইতালির ভাষায় কোয়ারানতা বলা হয়। সেই থেকেই কোয়ারেন্টাইন শব্দের উৎপত্তি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক পরিচালক ডা. মাহমুদুর রহমান বলেন, যেসব ব্যক্তিকে আপাত দৃষ্টিতে সুস্থ মনে হয় এবং তাদের মধ্যে ভাইরাসের কোনো উপসর্গ কিংবা লক্ষণ প্রকাশ পায়নি। কিন্তু জীবাণু থাকতে পারে, এমন মানুষদের সাধারণত কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়।
আর যাদের মধ্যে ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেয় এবং রোগ শনাক্ত হয় তাদের জন্য আইসোলেশন। অর্থাৎ আইসোলেশন হচ্ছে অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য।
এক্ষেত্রে জীবাণুর সুপ্তকালের ওপর নির্ভর করে আক্রান্ত ব্যক্তিকে কতদিন কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হবে। করোনাভাইরাসের সুপ্তকাল যেহেতু ১৪ দিন, তাই এ ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হয়। যদি উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে তাকে আইসোলেশনে নিয়ে যেতে হবে। তবে কতদিন আইসোলেশনে রাখতে হবে তার কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। যতদিন চিকিৎসা চলবে ততদিন তাকে আইসোলেশনে রাখতে হবে। অর্থাৎ সুস্থ হয়ে উঠার আগ পর্যন্ত।
কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশন কোথায় করা হয়?
আইসোলেশন মানে হচ্ছে আক্রান্ত রোগীকে একা চিকিৎসা দেয়া। এর জন্য হাসপাতালই সবচেয়ে বেশি নিরাপদ। আর যে রোগ আপনা-আপনি সেরে ওঠে সেগুলোর ক্ষেত্রে অনেক সময় রোগীকে নিজ বাড়িতে আলাদা কক্ষে থাকতে হয়। যদি জরুরি স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয় তাহলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়। এটাও এক ধরনের আইসোলেশন।
অন্যদিকে, কোয়ারেন্টাইনের ক্ষেত্রে অনেক কিছু নির্ভর করে। যেমন- রোগটির গুরুত্ব, আক্রান্তের ধাপ, পরিস্থিতি, অবস্থান, সক্ষমতা এসব কিছু বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে যারা চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে এসেছেন তাদের আশকোনা হজ ক্যাম্পে ১৪ দিন আলাদা করে রাখা হয়েছিল। এটাকে বলে নিয়ন্ত্রিত কোয়ারেন্টাইন।
আর স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনের ক্ষেত্রে নিজ বাড়িতে কিংবা নির্দিষ্ট একটি জায়গায় থাকতে বলা হয়। সেক্ষেত্রে কোনো উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসক বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়।
আইসোলেশনে থাকা রোগীদের যেভাবে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়
করোনায় আক্রান্তদের ক্ষেত্রে প্রায় ৮০ ভাগই নিজ থেকে ভাল হয়ে যায়। তবে রোগী অনেক বেশি হয়ে গেলে ভাইরাসটি ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। এক্ষেত্রে রোগীদের নিজ বাড়িতে আলাদা থাকতে পরামর্শ দেয়া হয়। আর জরুরি অবস্থার সৃষ্টি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালে রাখা হয়।
হাসপাতালে নেয়ার পর সব ধরণের সতর্কতা ও সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়ে আক্রান্তের চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Get the latest news on lifestyle, health, food, and more from our team of expert writers. From fitness tips and nutrition advice to travel guides and entertainment news, we cover the topics that matter most to you. Whether you're looking to improve your health, broaden your horizons, or just stay up-to-date with the latest trends, you'll find everything you need here.