হঠাৎ অর্থমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ, চাপে বরিস জনসনের সরকার

হঠাৎ করেই পদত্যাগ করেছেন ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ। গতকাল মঙ্গলবার তারা দু’জনই সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে পদত্যাগপত্র জমা দেন। সন্ধ্যায় টুইটারে এ ঘোষণা দেন তারা। প্রভাবশালী দুই মন্ত্রীর পদত্যাগে বড় ধরনের চাপে পড়ে গেল বরিস জনসনের সরকার। খবর বিবিসি ও আল জাজিরা।

ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ ও অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ঋষি সুনাক তার পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেছেন, এভাবে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ায় আমি দুঃখিত, মর্মাহত। কিন্তু এভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়া আমার পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। কারণ বরিস জনসনের সরকার জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছে না। অথচ জনগণ স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যাশা করে সঠিকভাবে, দক্ষতার সঙ্গে এবং গুরুত্বসহকারে সরকার পরিচালনা করা হবে। আর এজন্যই আমি পদত্যাগ করেছি।

অন্যদিকে সাজিদ জাভিদ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ওপর তার কোনো আস্থা নেই। একের পর এক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ার কারণে জাতীয় স্বার্থ রক্ষার সক্ষমতা বরিস জনসনের রয়েছে বলে তিনি মনে করেন না। তাই তিনি আর বরিস জনসনের সরকারে থাকতে আগ্রহী নন।

আবারো বিপাকে পড়েছেন বরিস জনসন

প্রধানমন্ত্রিত্বের দায়িত্ব নেয়ার আগের থেকেই আলোচিত-সমালোচিত হয়েছিলেন বরিস জনসন। করোনার সময়ে এসেও তার পরিবর্তন ঘটেনি। রাষ্ট্রের শীর্ষ পদে থেকেও করোনার বিধি লঙ্ঘন করে একাধিক পার্টি আয়োজন করে সমালোচিত হয়েছেন বরিস জনসন। আদালতের ভর্ৎসনার মুখে প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়েছিলেন তিনি। এমনকি বিষয়টি নিয়ে পদত্যাগের চাপেও ছিলেন তিনি। তবে শেষপর্যন্ত পার্লামেন্টে আনীত অনাস্থা প্রস্তাবে উতরে যান তিনি। সে সময় বরিস জনসন ৩৫৯ জন কনজারভেটিভ এমপির মধ্যে মাত্র ২১১ জনের সমর্থন লাভে সমর্থ হন। তার বিপক্ষে পড়ে ১৪৮ ভোট।

এর বাইরেও সরকার পরিচালনায় সক্ষমতা নিয়ে নিজ দল ও দলের বাইরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন বরিস জনসন। সম্প্রতি নতুন সমস্যয় জড়িয়ে পড়েন তিনি। রক্ষণশীল দলের এমপি ক্রিস পিঞ্চারের বিরুদ্ধে যৌন অসদাচরণের অভিযোগ সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও তাকে সরকারের ডেপুটি চীফ হুইপ হিসেবে নিয়োড় দেন তিনি।

এ ঘটনায় সমালোচনা শুরু হলে আবারও ক্ষমা চান বরিস জনসন। বারবার এমন সব ঘটনায় এবার তার নিজ দল থেকেই পদত্যাগের আওয়াজ উঠেছে। এমন সময় সরকারের প্রভাবশালী দুই মন্ত্রীর পদ ছাড়ার ঘোষণা নিশ্চিতভাবেই তাকে ভীষণ চাপে ফেলে দিলো।

যুক্তরাজ্যের নিয়ম অনুযায়ী ১২ মাসের মধ্যে দ্বিতীয় কোনো আস্থা ভোটের মুখোমুখি হতে পারবেন না প্রধানমন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে তাকে পদত্যাগ করতে হতে পারে। ফলে বিরোধীদল লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ের স্টার্মার বলছেন, এটি পরিষ্কার যে সরকার ভেঙে পড়ছে।