ন্যাটো: সুইডেন ও ফিনল্যান্ডে ঘাঁটি করার পরিকল্পনা নেই

সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ন্যাটোর সদস্য হলেও নরডিক অঞ্চলের দেশ দুটিতে জোটের সৈন্য ও অস্ত্র মোতায়েনের কোনো পরিকল্পনা নেই। ন্যাটোর উপ-মহাসচিব মির্চা জিওনা এ কথা বলেছেন।

গত সপ্তাহে মাদ্রিদে ন্যাটো সম্মেলনে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের জন্য অ্যাকসেশন প্রটোকল স্বাক্ষর করে জোটের সদস্য দেশগুলো

ন্যাটোর এ কর্মকর্তা বলেন, সুইডেন ও ফিনল্যান্ডে আমরা কোনো ঘাঁটি করব না। দুই দেশের মোটামুটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী রয়েছে। সম্ভাব্য রুশ হামলার মুখে আমরা ওই দুই বাহিনীর উপর নির্ভর করব।

তিনি বলেন, সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের সেনাবাহিনী উচ্চমানের। দুটি দেশের কৌশলগত পরিপক্কতা রয়েছে। কাজেই দুই দেশে সৈন্য ও অস্ত্র বৃদ্ধির কোনো পরিকল্পনা নেই। তাদের সেনাবাহিনী নিজেদের প্রতিরক্ষা নিশ্চিতের সামর্থ্য রাখে।

সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত করতে হলে পশ্চিমা সামরিক জোটটির সদস্য হতে দুই দেশ যে আবেদন জমা দিয়েছে, সেটা জোটের সবকটি সদস্য দেশের পার্লামেন্টে অনুমোদন হতে হবে। ন্যাটোর ৩০টি সদস্য দেশে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের আবেদন অনুমোদনের প্রক্রিয়া মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।

সদস্য দেশগুলোর পার্লামেন্টে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের আবেদন অনুমোদনের প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ন্যাটোর উপ-মহাসচিব। একই রকমের আশা প্রকাশ করেছেন ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টোলটেনবার্গ।

জেন্স স্টোলটেনবার্গ বলেন, আমি আশাবাদী যে আমাদের মিত্ররা যথেষ্ট দ্রুত ও মসৃণভাবে দুই দেশের আবেদন বলবতকরণের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করবেন।

এর আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ফিনল্যান্ড ও সুইডেনে ন্যাটো কোনো সেনা কন্টিনজেন্ট ও সামরিক অবকাঠামো মোতায়েন করলে তার দেশ একইভাবে জবাব দেবে। মস্কোর কর্মকর্তারা বারবার রাশিয়ার সীমান্তে ন্যাটো সম্প্রসারণ নিয়ে সতর্কতা জানিয়েছেন।

ন্যাটোর উপ-মহাসচিব মির্চা জিওনা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের পক্ষে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সমর্থন ও সহযোগিতাকে স্বাগত জানালেও ঠিক কতদিন ইউক্রেনকে এমন সহযোগিতা জোগানো সম্ভব হবে সে বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেন, ইউক্রেনে অস্ত্র ও গোলাবারুদের প্রবাহ কতদিন অব্যাহত রাখা যাবে সে ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে। ইউক্রেনের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তথ্য বিনিময় ঠিকঠাক চলছে। কিন্তু ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর রিজার্ভ নিয়ে সমস্যা রয়েছে।

মির্চা জিওনা বলেন, আশার কথা হচ্ছে পশ্চিমা নেতারা যুদ্ধ অব্যাহত থাকা পর্যন্ত ইউক্রেনকে সহায়তা দিয়ে যাবার অঙ্গীকার বারবার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। পশ্চিমা দেশগুলোর অস্ত্র প্রস্তুতকারকদের উৎপাদন-সক্ষমতা ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধির চেষ্টাও রয়েছে।

ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনে রুশ আক্রমণ শুরুর পর ফিনল্যান্ড ও সুইডেন সরকার নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে ন্যাটোতে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করে। এরপর দুই দেশ গত মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে ন্যাটোতে যোগদানের আবেদন জমা দেয়।

গত সপ্তাহে স্পেনের মাদ্রিদে ন্যাটো সম্মেলনে তুরস্ক সরকার ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের আবেদনে নিজেদের ভেটো প্রত্যাহার করে। এর ফলে ন্যাটোর ৩০টি সদস্য দেশ সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে জোটে নেওয়ার জন্য একটি অন্তর্ভুক্তি প্রক্রিয়া (অ্যাকসেশন প্রটোকল) স্বাক্ষরে সমর্থ হয়।