তুর্কি ও গ্রিক সাইপ্রাসের দ্বন্দ্ব মেটাতে চায় জাতিসংঘ

জ্বালানি প্রকল্পে তুর্কি ও গ্রিক সাইপ্রাসের মধ্যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক চায় জাতিসংঘ। সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, দুই প্রশাসনের উচিত সাইপ্রাস এবং এর আশেপাশের প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে উপকৃত হওয়া এবং জ্বালানি প্রকল্পে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সহযোগিতার হাত বাড়ানো। এক্ষেত্রে জাতিসংঘ মধ্যস্থতা করতে ইচ্ছুক বলে জানিয়েছেন গুতেরেস। টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

আন্তোনিও গুতেরেস

চলতি সপ্তাহে একটি প্রতিবেদনে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, দুই পক্ষের মধ্যে যাতে বিরোধ না থাকে, সেজন্য একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ এখনই নেওয়া দরকার। প্রতিবেদনটিতে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ১৪ জুন পর্যন্ত দুই সাইপ্রাসের মধ্যে সম্পর্কের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক উন্নয়ন এবং আর্থ-সামাজিক সমস্যাগুলো উভয় অংশের জনসাধারণের অবস্থানের বিষয়টি নিয়ে মিডিয়ায় নানা অসত্য তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে। এজন্য দুই অংশ জনগণের মধ্যে আরও বেশি শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব তৈরি হয়েছে।

বর্তমান আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সাইপ্রাসের দুই অংশের মধ্যে শান্তি প্রক্রিয়ার সম্ভাবনা আপাতত নেই। বিরোধ মেটাতে দুপক্ষের মধ্যে কোনো সংলাপ হচ্ছে না। এই কারণে শান্তি ফেরানো আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।

জাতিসংঘ প্রধান বলছেন, শান্তি প্রক্রিয়াটি দুই পক্ষের হাতেই রয়েছে। শান্তি ফেরাতে সাধারণ ভিত্তি খোঁজার ক্ষেত্রে দুই পক্ষের সমর্থন ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে জাতিসংঘ মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত। দুটি সম্প্রদায়ের নেতা এবং তাদের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি গ্রিস, তুরস্ক এবং যুক্তরাজ্য ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের প্রতিনিধিদের সাথে জাতিসংঘের কথাবার্তা অব্যাহত রয়েছে।

কয়েক দশকের বিবাদ: সাইপ্রাস দ্বীপটি গ্রিক সাইপ্রাস এবং তুর্কি সাইপ্রাস হিসেবে খ্যাত। জাতিসংঘের একাধিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কয়েক দশক ধরে দুই পক্ষ বিরোধে জর্জরিত রয়েছে। ১৯৬০ এর দশকের গোড়ার দিকে শুরু হওয়া জাতিগত আক্রমণ তুর্কি সাইপ্রাসের জনগণের নিরাপত্তার জন্য ছিটমহল থেকে সরে যেতে বাধ্য করে।

১৯৭৪ সালে দ্বীপটি গ্রিসের সাথে একীভূত হতে চাইলে তুর্কি অংশ বিরোধিতা করে। এর পর থেকে তুর্কি অংশে গ্রিস সরকার শুরু করে নিপীড়ন এবং সহিংসতা। এতে হস্তক্ষেপ করে তুরস্ক। ফলে ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় উত্তর সাইপ্রাস। সম্প্রতি পূর্ব এজিয়ান সাগর নিয়ে তুরস্ক ও গ্রিস বাগযুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে।