পরিস্থিতি চরমে, শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি

প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর সংকট-বিধ্বস্ত শ্রীলঙ্কায় দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহের মুখপাত্র দিনুক কলম্বেজ আজ বুধবার বলেছেন, দেশের পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

প্রেসিডেন্টের বাসভবন দখল করে নিয়েছে বিক্ষোভকারীরা

পুলিশ জানিয়েছে, পশ্চিম প্রদেশজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে, যার মধ্যে রাজধানী কলম্বোও রয়েছে। রাজাপাকসে সামরিক বিমানে মালদ্বীপে পালিয়ে যাওয়ার পরে ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে রাখতেই এই জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।

এদিকে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও করার চেষ্টাকালে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুঁড়তে বাধ্য হয়। একজন সিনিয়র পুলিশ অফিসার বলেছেন, কলম্বোতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভ চলছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে জরুরি অবস্থা জারি দরকার ছিল। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন চালানোর আদেশও রয়েছে।

গোতাবায়া রাজাপাকসে

প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার পদত্যাগ দাবি: কয়েক মাসের বিক্ষোভের পরে গত শনিবার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের বাড়ি এবং অফিসে হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। তারা প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আজ বুধবার পদত্যাগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন গোতাবায়া।

বুধবার সকালে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে প্রবেশ করতে থাকে। মানুষের একটি ক্রমবর্ধমান লাইন বাসভবনে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছিল। যাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা কলম্বোর বাইরে থেকে গণপরিবহনে করে আসেন।

শীর্ষ নেতাদের পদত্যাগের আগ পর্যন্ত সরকারি ভবন দখলে রাখার অঙ্গীকার করেছেন বিক্ষোভকারীরা। কয়েকদিন ধরে লোকেরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ভিড় করছে, যেন এটি একটি পর্যটন কেন্দ্র। জনগণকে প্রাসাদের পুলে সাঁতার কাটতে ও বালিশ দিয়ে উঁচু বিছানায় শুয়ে থাকতে দেখা যায়। একপর্যায়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত বাসভবন পুড়িয়ে দেয়।

শ্রীলঙ্কার আইনপ্রণেতারা আগামী সপ্তাহে একজন নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে সম্মত হয়েছেন। কিন্তু অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া দেশটির পতন ঠেকাতে একটি নতুন সরকার গঠনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তারা এখনও নিতে পারেননি।

গোতাবায়ার মেয়াদ ২০২৪ সালের নভেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। তার মেয়াদের বাকি অংশের দায়িত্ব পালন করবেন নতুন প্রেসিডেন্ট। প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে সংবিধান অনুযায়ী নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাকী মেয়াদ পূর্ণ করবেন। এসময় তিনি একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করতে পারেন।