প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগেই চীনকে হুমকি দিয়ে রাখলেন ঋষি

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে থাকা ঋষি সুনাক বলেছেন, তিনি নির্বাচিত হলে চীনের প্রতি কঠোর হবেন। এ সময় তিনি এশিয়ান পরাশক্তিকে দেশীয় ও বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য ‘এক নম্বর হুমকি’ বলেও অভিহিত করেছেন। খবর ইন্ডিয়া টুডে।

ঋষি সুনাক

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী লিজ ট্রাস অভিযোগ করেছিলেন, ঋষি সুনাক চীন ও রাশিয়ার প্রতি দুর্বল। এরই জবাবে গতকাল রোববার নিজের এমন অবস্থানের কথা জানান ঋষি।

এর আগে চীনের রাষ্ট্র পরিচালিত গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস বলেছিল, ব্রিটেনের দুই প্রার্থীর মধ্যে সুনাকেরই ইউকে-চীন সম্পর্কের উন্নয়নের বিষয়ে স্পষ্ট ও বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।

ব্রিটেন-চীন সম্পর্ক বিষয়ে উভয় প্রার্থীই কঠোর অবস্থানে

এদিকে সুনাক জানিয়েছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলে সংস্কৃতি ও ভাষা কর্মসূচির মাধ্যমে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতে ব্রিটেনে পরিচালিত ৩০টি কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের সবকটি বন্ধ করে দেবেন। এছাড়া ব্রিটেনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে চীনের কমিউনিস্ট পার্টিকে বিতাড়িত করারও অঙ্গীকার করেছেন তিনি।

এছাড়া চীনা গুপ্তচরবৃত্তির মোকাবেলায় সাহায্য করার জন্য ব্রিটেনের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই ৫-কে কাজে লাগানোর পাশাপাশি সাইবার জগতে ‘ন্যাটোর আদলে’ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গড়ে তোলার দিকে নজর দেবেন বলেও জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী হলে কৌশলগত স্পর্শকাতর প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্রিটিশ সম্পদের চীনের অধিগ্রহণ নিষিদ্ধের বিষয়টি খতিয়ে দেখারও কথা জানিয়েছেন সাবেক ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক। চীনের বিরুদ্ধে তিনি আরো অভিযোগ করেন, চীন আমাদের প্রযুক্তি চুরি করছে এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনুপ্রবেশ করছে।

এ সময় ঋষি সুনাক চীনের অবস্থানের সমালোচনা করে বলেন, রাশিয়ার তেল কেনার মাধ্যমে চীন পুতিনকে সমর্থন দিচ্ছে। একই সাথে দেশটি তাইওয়ানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোকে হয়রানি করছে। এ সময় চীনের বৈশ্বিক ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেওয়ায় বেইজিংয়ের তীব্র নিন্দা জানান। এছাড়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে জিনজিয়াংসহ দেশের বিভিন্ন অংশে মুসলমানদের নির্যাতন করারও সমালোচনা করেন তিনি।

ঋষি সুনাক এ সময় চীনকে সম্মান দেখানোয় ব্রিটেনসহ পশ্চিমা রাজনীতিবিদদের প্রতিও উষ্মা প্রকাশ করেন। বলেন, যথেষ্ট হয়েছে। অনেক দিন ধরে, ব্রিটেন ও পশ্চিমের রাজনীতিবিদরা তাদের জন্য লাল গালিচা বিছিয়েছেন এবং চীনের ঘৃণ্য কার্যকলাপ এবং তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা দেখেও না দেখার ভান করেছেন। আমি প্রধানমন্ত্রী হলে প্রথম দিনেই এসবে পরিবর্তন আনব।

আগামী ৫ সেপ্টেম্বর দলের দুই লাখ সদস্যের ভোটে নির্বাচিত হবেন কনজারভেটিভ পার্টির পরবর্তী নেতা। তিনিই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন। এ অবস্থায় ভোটার মন জয় করতে দুই প্রার্থীই সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।