শস্য রপ্তানি: বিশ্বমানবতা রক্ষায় কাজ করবে ইস্তাম্বুলের জেসিসি

ইউক্রেন থেকে শস্য রপ্তানি যাতে আরও সহজ হয়, সেজন্য তুরস্কের ইস্তাম্বুলে খোলা হয়েছে যৌথ সমন্বয় কেন্দ্র (জেসিসি)। এটি ইউক্রেনীয়, রাশিয়ান, তুর্কি এবং জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে যৌথভাবে পরিচালিত হবে। এর লক্ষ্য কৃষ্ণসাগরের মধ্য দিয়ে ইউক্রেনীয় শস্য রপ্তানির নিরাপদ উত্তরণ নিশ্চিত করা। তুরস্ক বলছে, কেন্দ্রটি মানবতা রক্ষার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

তুর্কি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকর

পূর্ব ও দক্ষিণ ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা অব্যাহত থাকার পরেও ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি নিশ্চিত করতে ইস্তাম্বুলে যুগান্তকারী একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর মধ্যস্থতা করেছে তুরস্ক।

কৃষ্ণসাগরের মধ্য দিয়ে ইউক্রেনীয় বন্দর থেকে শস্যের চালান তদারকির দায়িত্বে ইস্তাম্বুলের ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটিতে (এনডিইউ) জেসিসি উদ্বোধন করা হয়েছে। এনডিইউ হলো তুর্কি সামরিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যার সদর দপ্তর ইস্তাম্বুল। প্রতিষ্ঠানটি জেসিসির সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকবে।

তুর্কি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকর জেসিসির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বলেন, এই কেন্দ্র সমগ্র বিশ্বের জন্য মানবিক উদ্দেশ্যে কাজ করবে। এখান থেকে ইউক্রেন-রাশিয়া শস্য রপ্তানি চুক্তি ও এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হবে। সামরিক সংঘাতের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক খাদ্য ও শক্তি সঙ্কট দূর করতে কেন্দ্রটি সাহায্য করবে।

বিশ্বব্যাপী গম সরবরাহের এক-তৃতীয়াংশ ইউক্রেন এবং রাশিয়া থেকে আসে। দেশ দুটি বিশ্বের দুটি বৃহত্তম শস্য উৎপাদক। কিয়েভে রুশ হামলার পর ইউক্রেনের বন্দর অবরোধে বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তার আশঙ্কা বেড়েছে। আকরের মতে, ইউক্রেনীয় বন্দরে আটকে থাকা ২৫ মিলিয়ন টন শস্যের নিরাপদ চালান তত্ত্বাবধান করবে জেসিসি।

খবরে বলা হচ্ছে, ইউক্রেনীয় শস্য রপ্তানিতে অবরোধ অব্যাহত থাকলে আফ্রিকা থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্য পর্যন্ত খাদ্য সরবরাহের বৈশ্বিক নেটওয়ার্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা ও অবৈধ অভিবাসন বৃদ্ধি পাবে এবং গুরুতর নিরাপত্তা সমস্যার সৃষ্টি করবে।

আকর বলেন, ইউক্রেনের বন্দরে অপেক্ষা করা বিশাল পরিমাণ শস্য দ্রুত রপ্তানি করা উচিত এবং এটি আমাদের সকলের জন্য একটি বাধ্যবাধকতা। জেসিসি খোলার সাথেই বিশ্ববাজারে শস্য চুক্তির প্রভাব চোখে পড়ে। গমের দাম তাৎক্ষণিক কমে যায়। উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাশিয়ান এবং ইউরেশিয়ান স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক গ্রেগরি সিমন্স বলেন, খাদ্য সংকট দূর করার ক্ষেত্রে জেসিসি উদ্বোধন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।