মিয়ানমারে বিরোধী দমনে রুশ ফাইটার জেট ব্যবহার জান্তার!

মিয়ানমারে সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত সাধারণ মানুষ ও গোষ্ঠীগুলোকে দমনে নিয়মিতই গুলি-বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। এসব হামলায় ব্যবহার করা হচ্ছে রাশিয়ার অস্ত্র ও জেটবিমান। প্রত্যক্ষদর্শীদের এই অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে লন্ডনভিত্তিক একটি পর্যবেক্ষক গ্রুপ ‘মিয়ানমার উইটনেস’। খবর আল জাজিরা।

ইয়াক-১৩০ ফাইটার বিমান, ফাইল ছবি

গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মিয়ানমার উইটনেস জানিয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের ওপর রাশিয়ার তৈরি ইয়াক-১৩০ ফাইটার বিমান দিয়ে হামলা চালাচ্ছে। এসব জেট বিমান রকেট ও গোলা সজ্জিত। রাশিয়ার তৈরি এই অত্যাধুনিক দুই আসনের ফাইটার জেট খুব নিচ থেকেই হামলা চালাতে সক্ষম। মিয়ানমারে সেভাবেই হামলা চালাচ্ছে সামরিক জান্তা বাহিনী।

সংস্থাটি জানায়, বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া অভিযোগের স্বাধীন তদন্তে বিমান থেকে রকেট হামলা ও গোলা নিক্ষেপের সত্যতা পাওয়া গেছে। ধারণা করা হয়, মিয়ানমারের হাতে অন্তত ২০টি ইয়াক-১৩০ ফাইটার বিমান রয়েছে। সবশেষ ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ছয়টি ইয়াক-১৩০ মিয়ানমারকে দেয় রাশিয়া।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী

এছাড়া মিয়ানমারের হাতে রাশিয়ার তৈরি এমআই-৩৫ কপ্টার গানশিপও রয়েছে। সবশেষ গত বুধ ও বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের উত্তরে সাগাইং অঞ্চলে তিনটি সেনা হেলিকপ্টার ও রাশিয়ার তৈরি দুটি এমআই-৩৫ কপ্টার গানশিপ নিয়ে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী।

মিয়ানমারের গণমাধ্যম ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার সকালে সাগাইংয়ে জান্তাবিরোধী জনপ্রতিরোধ যোদ্ধাদের (পিডিএফ) ঘাঁটি লক্ষ্য করে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। অভিযানে আশপাশের দুটি গ্রামে অগ্নিসংযোগ করে জান্তা সেনারা। এতে সেখান থেকে পালাতে বাধ্য হয় শত শত গ্রামবাসী।

এছাড়া গত জুন মাসে কারেন রাজ্যের মাইয়াবতী উপশহরে ইয়াক-১৩০ ফাইটার জেট দিয়ে হামলা চালানো হয়। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সুচির গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এরপর সামরিক শাসন জারি করে মিয়ানমার জান্তা।

এর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হলে বিক্ষোভ দমনে নির্বিচার গুলি ও গ্রেপ্তার চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। আর এইমধ্যে দেশটির সেনাবাহিনীকে অস্ত্র ও ফাইটার জেট দিয়ে সহায়তা করে যাচ্ছে রাশিয়া।