ইরাকি পার্লামেন্টে সদর সমর্থকের ক্যাম্প!

ইরাকি শিয়া ধর্মগুরু মোকতাদা আল সদরের শত শত অনুসারী দেশটির পার্লামেন্টে ক্যাম্প করে রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান করছে। হিজরি মহররম মাসকে সামনে রেখে এদিন সকালে বিক্ষোভকারীরা ঐতিহ্যবাহী শিয়া রীতিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এ সময় তারা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্রত্যেকের সাথে ছিল খাবার কিংবা পানি। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

পার্লামেন্টে মোকতাদা আল সদরের শত শত অনুসারী

স্বেচ্ছাসেবকরা বিক্ষোভকারীদের স্যুপ, সিদ্ধ ডিম, রুটি এবং পানি বিতরণ করেন। কেউ কেউ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ভবনের ভেতরে রাত কাটান। এই ভবনটি সাদ্দাম হোসেনের আমলে তৈরি হয়েছিল। এর মার্বেল মেঝেতে কম্বল বিছিয়ে অবস্থান নেন পার্লামেন্ট সদস্যরা। অন্যরা বাগানে কিংবা তাল গাছের নিচে প্লাস্টিকের মাদুরে রাত্রিযাপন করেন।

একদিন আগে মোকতাদা আল সদরের সমর্থক এমপিরা টিয়ার গ্যাস, জলকামান এবং ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উপেক্ষা করে পার্লামেন্টে হামলা চালায়। তারা বাগদাদের কূটনৈতিক ও সরকারি ভবনের সুরক্ষিত গ্রিন জোনের দিকে যাওয়ার রাস্তাগুলোতে দেওয়া ভারী কংক্রিটের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে।

মোকতাদা আল সদর

রাজনৈতিক অচলাবস্থা: গত বছরের অক্টোবরে জাতীয় নির্বাচনের প্রায় দশ মাস পরও ইরাকে কোনো নতুন সরকার গঠন করা সম্ভব হয়নি। দলগুলোর মধ্যে আলোচনা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত সরকার গঠনের প্রচেষ্টা আলোর মুখ দেখেনি। বিশ্লেষকেরা বলেন, মোকতাদা আল সদর একসময় মার্কিন ও ইরাকি বাহিনীর বিরুদ্ধে তার মিলিশিয়ার নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে সরকার গঠনে প্রভাব সৃষ্টি করতে চাইছেন।

মোকতাদাপন্থি এমপিদের দাবি, শিয়া নেতা মোহাম্মদ শিয়া আল সুদানীকে প্রধানমন্ত্রী করা যাবে না। কারণ সুদানীর নেতৃত্বে আরেকটি ইরানপন্থী গ্রুপ সক্রিয়। ইরাকে ২০০৩ সালে সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর সরকার গঠন নিয়ে জটিলতা লেগেই আছে। গত অক্টোবরের নির্বাচনে মোকতাদা আল সদরের ব্লক সবচেয়ে বড় সংসদীয় দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। কিন্তু সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা তাদের নেই।

গত জুন মাসে সদরপন্থী ৭৩ জন আইনপ্রণেতা নতুন সরকার গঠনকে কেন্দ্র করে বিরোধের মধ্যে পদত্যাগ করেন। এর ফলে ইরানপন্থী শিয়া আল সুদানীর গ্রুপটি পার্লামেন্টে বৃহত্তম হয়ে ওঠে। এর পর থেকে সদরের সমর্থকরা পার্লামেন্টে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।