শস্য রপ্তানি চুক্তি: ইউক্রেন থেকে প্রথম জাহাজ ছাড়তে পারে আজ

রাশিয়া, ইউক্রেন, তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যে স্বাক্ষরিত শস্য রপ্তানি চুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেনের শস্যবাহী প্রথম জাহাজ আজ সোমবার রওয়ানা শুরু করতে পারে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বলেছেন, সব কিছু ঠিক থাকলে সোমবার ইউক্রেনের প্রথম শস্যবাহী জাহাজটি ছেড়ে যাবে। খবর রয়টার্স।

যাত্রার জন্য প্রস্তুত ইউক্রেনের শস্যবাহী জাহাজ

ইউক্রেনে রুশ অভিযানের প্রেক্ষিতে দেশটি থেকে সাগরপথে সব ধরনের রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে বিশ্বের অনেক দেশে খাদ্যশস্যের দাম বেড়ে যায়। মূল্যস্ফীতি দেখা দেয় বিশ্বের প্রায় সব দেশেই। বিশেষকরে, আফ্রিকার দরিদ্র দেশগুলো দুর্ভিক্ষের মুখে পড়ে। এ অবস্থায় তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতার শস্য রপ্তানি চুক্তিতে সম্মত হয় রাশিয়া ও ইউক্রেন। 

ইব্রাহিম কালিন গতকাল রোববার বলেন, চুক্তির পরপরই জাহাজে পণ্য ভরার কাজ শুরু হয়। যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হলে প্রথম জাহাজটি হয়তো আগামীকালই (সোমবার) ইউক্রেনের বন্দর ছেড়ে যেতে পারে।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শস্য রপ্তানি চুক্তি সই

এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার দেশের ফসল উৎপাদন ব্যাপকহারে কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। গতকাল টুইটারে এক পোস্টে তিনি লেখেন, রাশিয়ার হামলার কারণে এ বছর তার দেশের ফসল উৎপাদন স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অর্ধেকে নেমে আসতে পারে।

ইউক্রেন তুলনামূলক ছোট রাষ্ট্র হলেও এটি বিশ্বের চতুর্থ খাদ্যশস্য রপ্তানিকারক দেশ। পরিসংখ্যান অনুসারে, বিশ্বের ৪২ ভাগ সূর্যমুখী তেল, ১৬ শতাংশ ভুট্টা এবং ৯ শতাংশ গম উৎপাদন করে দেশটি। কিন্তু রাশিয়ার সাথে যুদ্ধের জেরে সমুদ্রপথ ব্যবহার করে ইউক্রেনের সব ধরনের রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। একই সাথে নানা ধরনের অবরোধের কারণে রাশিয়া থেকেও খাদ্যশস্য রপ্তানি কমে গেছে।

পশ্চিমারা দাবি করে, রাশিয়ার কৃষিপণ্য রপ্তানির ওপর কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। কিন্তু ব্যাংক, পরিবহনসহ বিভিন্ন পর্যায়ে অবরোধ, নিষেধাজ্ঞার কারণে মস্কোর খাদ্যশস্য রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক জানিয়েছে, আফ্রিকার চাহিদার ৪০ ভাগ গমই সরবরাহ করে রাশিয়া ও ইউক্রেন। কিন্তু চলমান যুদ্ধের কারণে প্রায় তিন কোটি টন খাদ্যের ঘাটতি তৈরি হয়েছে আফ্রিকায়। এ কারণে মহাদেশজুড়ে খাবারের দাম বেড়ে গেছে ৪০ শতাংশ। এ অবস্থায় গত কয়েক মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর থেকে ইউক্রেনের শস্যবাহী জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার খবরকে সবাই স্বাগত জানাচ্ছে।