মার্কিন ড্রোন হামলায় আল কায়েদা প্রধান জাওয়াহিরি নিহত

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-এর ড্রোন হামলায় আল কায়েদা নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত রোববার ড্রোনের মাধ্যমে ওই হামলা চালানো হয়। খবর আল জাজিরা, বিবিসি, আনাদোলু।

আইমান আল-জাওয়াহিরি

২০১১ সালে পাকিস্তানে মার্কিন অভিযানে আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেন নিহত হন। এরপর ওই বছরের ১৬ জুন আয়মান আল-জাওয়াহিরিকে আল কায়েদার নতুন নেতা হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। ওসামা বিন লাদেন বেঁচে থাকা অবস্থায় জাওয়াহিরিকে সংগঠনটির দ্বিতীয় প্রধান মনে করা হতো।

গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক বিশেষ ভাষণে বাইডেন বলেন, জাওয়াহিরি মার্কিন নাগরিকদের ওপর হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতা চালিয়েছিলেন। এই সন্ত্রাসী নেতা আর নেই এবং এর মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

হোয়াইট হাউসে ভাষণ দিচ্ছেন জো বাইডেন

ভাষণে ড্রোন হামলার ব্যাপারে বাইডেন আরো বলেন, এটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমেরিকান সংকল্পের একটি স্পষ্ট প্রদর্শন। আমরা আবারো স্পষ্ট করে দিয়েছি, যতই সময় লাগুক না কেন, আপনি যেখানেই লুকিয়ে থাকুন না কেন, আপনি যদি আমাদের জনগণের জন্য হুমকি হয়ে থাকেন তবে যুক্তরাষ্ট্র আপনাকে খুঁজে বের করবেই।

স্থানীয় সময় রোববার ভোরে মার্কিন অভিযানটি পরিচালিত হয়। কাবুলের কেন্দ্রস্থলে একটি বাড়িকে লক্ষ্য করে হামলাটি চালানো হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, জাওয়াহিরি, তার স্ত্রী, কন্যা এবং নাতি-নাতনিরা চলতি বছরের শুরুতে ওই বাড়িতে স্থানান্তরিত হয়েছিলেন।

মার্কিন সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র কয়েক মাস ধরে বিষয়টি জানতে পারে এবং বাইডেন গত মে মাস থেকে এ ব্যাপারে নিয়মিত আপডেট পাচ্ছিলেন। সিআইএ তখন থেকে জাওয়াহিরিকে হত্যার একটি পরিকল্পনা তৈরি করছিল এবং যথাসম্ভব কম ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারটি নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছিল।

মার্কিন ওই কর্মকর্তা বলেন, রোববার জাওয়াহিরি একা থাকাকালে একটি মার্কিন ড্রোন থেকে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে তাকে হত্যা করা হয়। ওই সময় তিনি বাড়ির ব্যালকনিতে অবস্থান করছিলেন। হামলায় জাওয়াহিরির পরিবারের অন্য কোনো সদস্য বা অন্য বেসামরিক লোক হতাহত হয়নি।

মার্কিন গোয়েন্দারা দাবি করেন, ওই হামলার পর তালেবান সদস্যরা সেখানে আল-কায়েদা নেতার উপস্থিতি গোপন করার চেষ্টা চালায় এবং ওই এলাকায় সব ধরনের প্রবেশাধিকার কয়েক ঘণ্টার জন্য নিষিদ্ধ করে দেয়। তারা জাওয়াহিরির স্ত্রী, মেয়ে ও নাতিদের দ্রুত অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যায়।

এদিকে তালেবান কর্তৃপক্ষ মার্কিন এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, কাবুলে মার্কিন এই ড্রোন হামলা আন্তর্জাতিক নীতি ও দোহা চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ওয়াশিংটন ও তালেবান ২০২০ সালে দোহা চুক্তিতে সই করেছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, আল-জাওয়াহিরি ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে চালানো আল কায়েদার হামলার সমন্বয় করতে সাহায্য করেছিলেন। ওই হামলায় প্রায় ৩ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল। মিশরীয় এই সার্জনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র তখন আড়াই কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিল।