১১ জনের মুক্তির খবরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন বিলকিস বানু!

ভারতের আলোচিত গুজরাট দাঙ্গার সময় গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন মুসলিম নারী বিলকিস বানু। ওই ঘটনায় ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারা‌দণ্ড দিয়েছিল আদালত। এমন রায়ের খবর শোনার পর বিলকিস বানু অজ্ঞান হয়ে যান। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

ধর্ষকদের মুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ

কিন্তু চলতি সপ্তাহে চলতি সপ্তাহে গুজরাটের বিজেপি দলীয় সরকারের গঠিত একটি রিভিউ কমিটির সুপারিশে সাজা মওকুফ করে ১১ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়। কমিটির ১০ সদস্যের মধ্যে ৫ জন বিজেপির কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য, ২ জন এমএলএ।

গুজরাট দাঙ্গার সময় প্রদেশটির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ২০০২ সালের ওই দাঙ্গায় হাজারের ওপর (১ হাজার ৪৪ জন) মুসলিম নিহত হয়েছিলেন। গোধরা জেলার রাধিকাপুরে বিলকিস বানুর গ্রামেই ১৪ জনকে হত্যা করা হয়। এদের মধ্যে আটজন বিলকিস বানুর পরিবারের সদস্য।

খবরে বলা হচ্ছে, দাঙ্গায় আক্রান্ত বিলকিস বানুর পরিবারের মধ্যে তিনি ও তার দুই সন্তান বেঁচে আছেন। ধর্ষকদের মুক্তির খবর শোনার পর তাৎক্ষণিক ওই নারীর জ্ঞান হারানোর বিষয়টি গত বুধবার নিশ্চিত করেছেন তার আইনজীবী।

এক বিবৃতিতে ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, আমি সর্বোচ্চ আদালতকে বিশ্বাস করেছিলাম। বিচারকদের ওপর আস্থা রেখেছিলাম এবং ট্রমা নিয়ে বাঁচতে শিখেছিলাম। কিন্তু এই রায় আমরা ঘুম কেড়ে নিয়েছে। ন্যায়বিচারের প্রতি আমার বিশ্বাসকে নাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিটি নারীর জন্য এটা দুঃখজনক, বিশেষ করে যারা আদালতে ন্যায়বিচারের জন্য সংগ্রাম করছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। দাঙ্গার সময় বিলকিস বানু গর্ভবতী ছিলেন এবং নিহতদের মধ্যে তার তিন বছরের মেয়েসহ আত্মীয়-স্বজন ছিল।

গুজরাটের আদালত ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ধর্ষকদের মুক্তি দিয়েছে। কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার পর স্বজনরা তাদের মিষ্টিমুখ করান এবং আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন। বিষয়টি নিয়ে বিরোধী রাজনীতিবিদ রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে টুইট করে বলেছেন, পুরো দেশ আপনার কথা এবং কাজের মধ্যে পার্থক্য দেখতে পাচ্ছে।

উল্লেখ্য, গুজরাট দাঙ্গার জন্য নরেন্দ্রে মোদিকে অভিযুক্ত করা হয়। ২০১২ সালে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তুলে নেওয়া হয়। এ বিষয়ে দেশটির বিশিষ্ট মুসলিম রাজনীতিবিদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, ইসলাম ধর্মের প্রতি মোদির ক্ষমতাসীন বিজেপির পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ চরম ঘৃণ্য। নৃশংস ধর্ষণ ও ঘৃণামূলক অপরাধ ক্ষমার যোগ্য।