বিলকিসকাণ্ডে জাভেদ আখতার: সমাজের ঘোরতর অসুখ হয়েছে

২০০২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিস বানু গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। দুর্বৃত্তরা তার চোখের সামনে খুন করেছিল পরিবারের সদস্যদেরকে। আছড়ে মেরেছিল তার তিন বছরের মেয়েকেও। দীর্ঘ ছয় বছর পর শাস্তির মুখোমুখি হয়েছিল অপরাধীরা। ১১ অপরাধীকে দেওয়া হয়েছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তবে গত ১৫ আগস্ট তাদেরকে মুক্তি দেয় গুজরাট সরকার। খবর হিন্দুস্তান টাইমস।

জাভেদ আখতার ও বিলকিস বানু

এর পর থেকে দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের নানা স্তরের মানুষ এ ঘৃণ্য সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। মানবাধিকারকর্মী, শিক্ষক, সাহিত্যিকসহ সমাজের সকল অংশের প্রতিনিধিদের এই মিছিলে এবার শামিল হয়েছেন বিশিষ্ট কবি, গীতিকার এবং চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতার।

এ ধরনের অপরাধীদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে জাভেদ আখতার এক টুইটে লেখেন, পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ধর্ষণ, তিন বছরের শিশুকে আছড়ে মেরে ফেলার পরও দোষীদের যদি মুক্তি দেওয়া হয়, মিষ্টি মুখ করিয়ে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করা হয়, তা হলে আমি নিশ্চিত, এই সমাজের ঘোরতর কোনো অসুখ হয়েছে। আমাদের মধ্যে কিছু গণ্ডগোল তো রয়েছেই।

মুক্তি পাওয়া ১১ জন

এর আগে বিলকিসকাণ্ড নিয়ে মুখ খুলেছেন বিচারপতি মৃদুলা ভাটকর। তিনি বলেন, এই দোষীদের শাস্তি মওকুফ করায় সাধারণ মানুষ বিচারব্যবস্থার সমালোচনা করছেন। অথচ বিচারকরা এর জন্য কোনোভাবেই দায়ী নয়। আমি সবাইকে জানাতে চাই, বিচারপতিরা মানবাধিকার রক্ষা করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন।

তিনি নিজে ১১ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা বহাল রেখেছিলেন জানিয়ে বলেন, আমি বুঝতে পারছি না, মানুষ কেন শুধু শুধু বিচারব্যবস্থাকে দোষারোপ করছে। অপরাধীদের সাজা মাফ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গুজরাট সরকার। তাতে আদালতের কোনও ভূমিকা নেই।

প্রসঙ্গত, ধর্ষকদের সঙ্গে অভিযুক্ত পুলিশকর্মী এবং ডাক্তারদেরও যেন শাস্তি দেওয়া হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিলেন ভাটকর।

এদিকে, ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। সেই পিটিশনে সই করেছেন সমাজের সব স্তরের প্রায় ছয় হাজার মানুষ। পিটিশনে বলা হয়েছে, গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে ধর্ষকরা এহেন ঘৃণ্য কাজ করতে আরও বেশি উৎসাহী হয়ে উঠবে।