কুয়েতে চাকরি হারাচ্ছেন সাড়ে সাত লাখ মিশরীয়

কুয়েতে কর্মরত সাড়ে সাত লাখ মিশরীয় নাগরিক আগামী বছর নাগাদ চাকরি হারাচ্ছেন। এর মধ্যে আগামী মাসেই আড়াই লাখ মিশরীয়কে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। খবর মিডল ইস্ট মনিটর।

কুয়েতে মিশরীয় কর্মী

কুয়েতের স্টেট অডিট ব্যুরোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশটির মোট কর্মশক্তির প্রায় ২৪ শতাংশ জুড়ে থাকা মিশরীয়রা ছিল দেশটির বৃহত্তম প্রবাসী গোষ্ঠী। দ্বিতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠী ভারতের কর্মীরা। তারা রয়েছে দেশটির শ্রমশক্তির ২৩ দশমিক সাত শতাংশ জুড়ে। আরেক হিসেবে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে ৭৭ দশমিক ৭ শতাংশ নন-কুয়েতির বিপরীতে মাত্র ২২ দশমিক ৩ শতাংশ কর্মশক্তি কুয়েতি।

এ অবস্থায় কুয়েত এক ঘোষণায় জানিয়েছে, তারা আগামী মাসে আড়াই লাখ মিশরীয় কর্মী ছাঁটাই করবে। পাশাপাশি কুয়েতি ছাড়া অন্য দেশের কর্মীদের সাথে সব ধরনের চুক্তি স্থগিত করবে। এক্ষেত্রে আরও প্রায় পাঁচ লাখ মিশরীয় আগামী বছর নাগাদ কুয়েতে চাকরি হারাবেন।

কুয়েতে কর্মরত বিদেশি নাগরিক

জানা গেছে, কুয়েত কর্তৃপক্ষ এমনিতেই বিদেশি কর্মীর সংখ্যা কমিয়ে আনতে চাইছে। এর মধ্যে বেশ কিছু ঘটনায় দেশটির মিশরীয় কর্মীদের প্রতি বিরক্ত হয়ে উঠেছে কর্তৃপক্ষ। বছর দুয়েক আগে একজন কুয়েতি গ্রাহক বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে এক মিশরীয় ক্যাশিয়ারকে থাপ্পড় মারে। এ ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেলে মন্তব্যকারীরা কুয়েতকে বর্ণবাদের জন্য দায়ী করে। একই বছর কুয়েতে একজন মিশরীয় কর্মীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছিল। এ সব ঘটনায় কুয়েত-মিশর সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

এ অবস্থায় ২০২০ সালে কুয়েত পার্লামেন্ট মিশরীয়দের সংখ্যা দশ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে বিদেশি কর্মী হ্রাস করার জন্য একটি খসড়া আইনের প্রস্তাব করেছিল। ওই আইনে বলা হয়, সরকারি সংস্থাগুলোর জন্য বিদেশি কর্মীদের নবায়ন করা উচিত হবে না।

এদিকে এ বছর মিশরে বেকারত্বের হার ৭ দশমিক ২ শতাংশে পৌঁছেছে। এ অবস্থায় সাড়ে সাত লাখ মিশরীয় শ্রমিক ছাটাই করার সিদ্ধান্তটি দেশটির ওপর বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে মিশরের রেমিট্যান্স ৩১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছে। এটি দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার একটি প্রধান উৎস।