আপনি পড়ছেন

ঋণ মওকুফের প্রশ্নে চীনকে অবস্থান পাল্টাতে বলছে শ্রীলঙ্কা। কোনো দেশ চীনের কাছে দেনা মেটাতে ব্যর্থ হলে চীনা কর্মকর্তারা সে দেশকে নতুন করে ঋণ গ্রহণ অথবা কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন। কিন্তু শ্রীলঙ্কা চাইছে অন্যান্য পাওনাদারের মতো চীন তাদের ঋণ পুনর্গঠন করুক অথবা কিছুটা মওকুফ করুক। আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) কর্মকর্তাদের কলম্বো পোঁছার প্রাক্কালে নিক্কেই এশিয়ার সঙ্গে আলাপচারিতায় এসব কথা বলেছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে।

prime minister ranil wickremesingheরনিল বিক্রমাসিংহে

বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের ঘাটতি থেকে উদ্ধারে আইএমএফের দ্বারস্থ হয়েছে শ্রীলঙ্কা। বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটির কাছে ২০০-৩০০ কোটি ডলার চেয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি। আইএমএফ বলেছে, নতুন করে ঋণ দেওয়ার আগে তারা এ মর্মে নিশ্চয়তা চায় যে, ওই ঋণ টেকসই হবে। যাদের কাছে শ্রীলঙ্কার দেনা রয়েছে, তাদের থেকেই এ বিষয়ে আশ্বাস পেতে হবে।

আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল আজ সকালে কলম্বো পৌঁছেছে। চলতি মাসের শেষদিন পর্যন্ত দলটি শ্রীলঙ্কা থাকবে। এ সময় তারা শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। দুই পক্ষের আলোচনা সফল হলে বেইল আউট (সংকট উত্তরণের ঋণ) বিষয়ে আইএমএফের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার একটি স্টাফ লেভেল চুক্তি হতে পারে।

পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ঋণের প্রশ্নে চীনকে নমনীয় করতে শ্রীলঙ্কাকে রাজি করানোর জন্যই আইএমএফ কর্মকর্তারা কলম্বো সফর করছেন। শ্রীলঙ্কার পথে রওনা হবার আগে আইএমএফের এক বিবৃতিতেও তেমন আভাসই মিলছে। সংস্থাটি বলেছে, যেহেতু শ্রীলঙ্কার সরকারি ঋণ পরিস্থিতি আনসাসটেইনেবল, তাই আইএমএফের এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি অনুমোদন হতে হলে শ্রীলঙ্কার ঋণদাতাদের তরফ থেকে এ মর্মে পর্যাপ্ত আশ্বাস থাকা চাই যে, দেশটির ঋণ-স্থায়িত্ব পুনর্বহাল করা হবে।

আইএমএফের এ শর্ত পূরণ করাই শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের জন্য অগ্নিপরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৫ হাজার ১০০ কোটি বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণের ভারে জর্জরিত দেশটি চলতি বছর কিস্তি বাবদ ৬৯০ কোটি ডলার পরিশোধ করার কথা। কিন্তু বৈদেশিক রিজার্ভ না থাকায় শ্রীলঙ্কা এপ্রিল মাসে খেলাপি হয়েছে।

চীন থেকে শ্রীলঙ্কার নেওয়া মোট ঋণ ৯৯৫ কোটি ডলার। চীন ঋণ মওকুফ বা পুনর্গঠনে রাজি না হলে আইএমএফ থেকে শ্রীলঙ্কা ২০০-৩০০ কোটি ডলার পেলেও সে অর্থ চীনের কিস্তি পরিশোধেই ফুরিয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কার ঋণ-স্থায়িত্ব বা ডেট সাসটেইনিবিলিটি থাকে না।

শ্রীলঙ্কার দ্বিপক্ষীয় ঋণদাতাদের মধ্যে চীন ছাড়াও রয়েছে জাপান ও ভারত। বহুপাক্ষিক ঋণদাতাদের মধ্যে এডিবি ও বিশ্বব্যাংক। এছাড়া পশ্চিমা বন্ড হোল্ডারদের কাছ থেকে দেশটি নিয়েছে ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। অন্য পাওনাদারদের ঋণ মওকুফ বা ছাড়ে রাজি করানো সম্ভব হলেও এ বিষয়ে ঋণের সম্মতি পাওয়া কঠিন হবে বলে মনে করছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট। এজন্য তিনি চীনকে অবস্থান পাল্টানোর অনুরোধ করেছেন।

রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, আমরা চীনকে ঋণ পুনর্গঠন এবং সব পাওনাদারের এক সুরে কথা বলার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অবহিত করেছি। কিন্তু চীন ভিন্ন সুরে কথা বলছে। এখন অন্য পাওনাদার পক্ষগুলো চীনের সঙ্গে কি চুক্তিতে উপনীত হয়, আমরা সেদিকে তাকিয়ে আছি।

কলম্বোর ফাইন্যান্সিয়াল কনসালটেন্সি ফার্ম জেবি সিকিউরিটিজের এমডি মুরতাজা জাফিরজি বলেন, অন্য পক্ষগুলোর মতো কিছু ঋণ ছাড় দিতে চীনকে রাজি করাতে হবে। যেহেতু শ্রীলঙ্কাকে চীন ডলারে ঋণ দিয়েছে, তাই ছাড়ের প্রশ্নে রাজি না হয়ে চীনেরও লাভ হবে না।  

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.