এবার তুরস্ককে নিষেধাজ্ঞার হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের

রাশিয়ার সাথে তুরস্কের চলমান ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও বাণিজ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, আঙ্কারা যদি তাদের এই সম্পর্ক অব্যাহত রাখে তাহলে তাদেরও মস্কোর মতো একই ধরনের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হতে পারে। গত মঙ্গলবার তুরস্কের শিল্প ও ব্যবসায়িক সমিতি (টিইউএসআইএডি) একটি বিবৃতিতে এ খবর নিশ্চিত করেছে। খবর মিডল ইস্ট মনিটর।

মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ওয়ালি আদেয়েমো

টিইউএসআইএডি জানায়, মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ওয়ালি আদেয়েমো তুর্কি অ্যাসোসিয়েশন এবং তুরস্কের আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সকে একটি চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছেন, তুরস্কের কোম্পানি ও ব্যাংকগুলো ওয়াশিংটন কর্তৃক নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকির মুখে রয়েছে।

ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যেসব ব্যক্তি বা সংস্থাকে নিষিদ্ধ করেছে সেসব ব্যক্তি বা সংস্থাকে সহায়তা দেওয়া কোম্পানিগুলোও ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিতে রয়েছে। তুরস্কের ব্যাংকগুলো বৈশ্বিক ব্যাংকগুলোর ডলার ও অন্যান্য মুদ্রার মাধ্যমে ব্যবসায়ের পাশাপাশি রাশিয়ার কোনো ব্যাংকের সাথেও ব্যবসা বা সম্পর্ক স্থাপনের আশা করতে পারে না।

এরদোয়ান ও পুতিনের সম্পর্ক বেশ ভালো

সম্প্রতি আদেয়েমোর আঙ্কারা ও ইস্তাম্বুল সফরের পর এই সতর্কতা জারি করা হয়। সেখানে রাশিয়ার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অলিগার্কদের সাথে তুরস্কের ব্যবসার সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তুরস্ককে প্রতিহত করতে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়েছিল।

গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে সামরিক অভিযানের নিন্দা করা, ইউক্রেনকে রাজনৈতিকভাবে সমর্থন করা, সহায়তা দেওয়া এবং অস্ত্র বিক্রি করা সত্ত্বেও আঙ্কারা ক্রেমলিনের সাথে তার সম্পর্ক বজায় রেখেছে।

যুক্তরাষ্ট্র দাবি করছে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া সুইফট পেমেন্ট সিস্টেম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পরও তুরস্কের ব্যাংকিং সুবিধা ব্যবহার করে মস্কো অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তারা মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়াতে তুরস্ককে মাধ্যম বানিয়ে বিভিন্ন দেশের সাথে আর্থিক যোগাযোগ অব্যাহত রাখছে। একই সাথে চলতি মাসের গোড়ার দিকে, দুই দেশ রুশ মুদ্রা রুবলে গ্যাস সরবরাহ এবং দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও গভীর করতে সম্মত হয়।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশমতো আঙ্কারা রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে এবং দেশটির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান বলেছেন, রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক ও সংলাপ ছিন্ন করলে তা বিপরীত ফল দেবে। কারণ বর্তমানে তুরস্ক একটি নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকায় বিভিন্ন বিষয়ে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে পারছে। রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে গেলে সেটি আর সম্ভব হবে না।

পাশাপাশি তুরস্কের সরকার এ-ও অবগত আছে, রাশিয়ার সাথে তাদের সম্পর্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো রাগান্বিত হতে পারে এবং তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে। কিন্তু তা সত্ত্বেও জ্বালানির জন্য রাশিয়ার ওপর ব্যাপক নির্ভরতা এবং রুশ অবরোধের কারণে নিজেদের অর্থনীতির ক্ষতি বৃদ্ধির শঙ্কা থাকায় তুরস্ক সরাসরি রাশিয়ার বিরোধিতা করবে না।