ফ্রান্স-আলজেরিয়াকে কাছে আনল ইউক্রেন যুদ্ধ

বহুবছর পর সুসম্পর্ক স্থাপন করতে চলেছে ফ্রান্স ও আলজেরিয়া। ফ্রান্সের পেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন আলজেরিয়ায় তিনদিনের সফরে রয়েছেন। দুদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক ফেরানোর পেছনে কাজ করছে মূলত ইউক্রেন যুদ্ধ। জ্বালানি সংকটে ইউরোপ যখন নাকাল, তখন ফ্রান্স উত্তর আফ্রিকান গ্যাসের সুবিধা নিতে চায়। পাশাপাশি ভূমধ্যসাগরজুড়ে অভিবাসনও বেড়েছে। এ সুযোগ নিতে চায় আলজেরিয়া। তাছাড়া আলজেরিয়া ইউরোপ থেকে জ্বালানির উচ্চমূল্য পেতে চায়। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

ফ্রান্স ও আলজেরিয়ার পতাকা

খবরে বলা হচ্ছে, ম্যাক্রন দীর্ঘদিন ধরে আলজেরিয়ার সাথে বন্ধ থাকা অধ্যায় উন্মুক্ত করতে চাচ্ছেন। এর আগেও তিনি ২০১৭ সালে একবার আলজেরিয়া সফর করেছিলেন। ওই সফরে তিনি স্বীকার করেছিলেন, ১৯৫৪-৬২ যুদ্ধের সময় আলজেরিয়ায় ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ করেছিল ফরাসি সেনারা।

প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে সফরের শুরুতে দুদেশের মধ্যে বেদনাদায়ক অধ্যায় শেয়ার করেছেন। সবকিছু ভুলে তিনি ভালো ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে চান। গতকাল বৃহস্পতিবার আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আব্দেল মাদজিদ তেবোউনের সাথে দেখা করার পর ম্যাক্রন বলেন, আমাদের একটি জটিল ও বেদনাদায়ক অতীত আছে। এটি মাঝে মাঝে আমাদের ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে বাধা দিয়েছে।

ইমানুয়েল ম্যাক্রন

তিনি বলেন, ঔপনিবেশিক আমলে দুদেশের ইতিহাস অধ্যয়নের জন্য আলজেরিয়া ও ফ্রান্স উভয় দেশের ঐতিহাসিকদের নিয়ে একটি যৌথ কমিটি গঠন করা হবে। আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট টেবোউন বলেন, আমরা আশা করি ম্যাক্রনের সফর ফ্রান্সের সাথে অংশীদারিত্ব এবং সহযোগিতার নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উন্মোচন করবে।

টেবোউন বলেন, আজকে আমরা যে গঠনমূলক আলোচনা করেছি, তা প্রমাণ করে দুদেশের সম্পর্ক কতটা আন্তরিক ও গভীর। টেবোউনের সাথে সাক্ষাতের আগে ম্যাক্রন ঐতিহাসিক যুদ্ধে নিহত আলজেরিয়ানদের একটি স্মৃতিস্তম্ভ পরিদর্শন করেন ও সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

আলজেরিয়া ১৯৬২ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পর থেকে দুদেশের মধ্যে কয়েক দশক ধরে ভালো সম্পর্ক যাচ্ছিল না। ইউক্রেন যুদ্ধ দেশ দুটিকে আবারও কাছে এনেছে। উভয় দেশ সংকট মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে যেতে চায়।