নেপালের বিদ্যুৎ কূটনীতি: ভারত ইন, চীন আউট

নেপালে চীনের পরিত্যক্ত দুটি বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পে আগ্রহ দেখিয়েছে ভারত। ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এই দুটি প্রকল্প থেকে ভারত সুবিধা নিতে চায়। গত ১৮ আগস্ট প্রকল্প দুটি ভারতের জাতীয় জলবিদ্যুৎ কর্পোরেশনকে (এনএইচপিসি) হস্তান্তর করেছে নেপাল। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

ভারত ও নেপালের পতাকা

প্রকল্প দুটি হচ্ছে- পশ্চিম সেতি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এবং সেতি নদী প্রকল্প (এসআর৬)। প্রকল্প দুটি একটি স্টোরেজ সিস্টেম হবে, যা সারা বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। এই বিদ্যুৎ ভারত তার জাতীয় গ্রিডে যুক্ত কিংবা রপ্তানি করতে পারবে।

চীনের সিডব্লিউই ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন ২০১৮ সালে প্রকল্প দুটি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়। কারণ হিসেবে দেশটি জানায়, প্রকল্পগুলো থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া প্রায় অসম্ভব। তাছাড়া এগুলোর পুনর্বাসন খরচও খুব বেশি।

ভারত ও নেপালের সীমান্ত

এর আগে নেপাল ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি চীনের স্নোই মাউন্টেন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের লাইসেন্স নবায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল। কারণ পুরো এক দশক ধরে কাজ করেও কোম্পানিটি সক্ষমতা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়।

নেপালের বিদ্যুৎ খাত: নেপালে আনুমানিক ৮৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু দেশটিতে বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে বিশাল এবং প্রায় ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের বিপরীতে মাত্র ৯০০ মেগাওয়াট উৎপাদন করতে সক্ষম হয় দেশটি।

যদিও নেপাল বর্তমানে ভারতের কাছে ছয়টি প্রকল্প উৎপাদিত ৩৬৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি করছে। দেশটি বর্ষা মৌসুমে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করে এবং শুষ্ক মৌসুমে ঘাটতি পড়ে। তাই ভারত থেকেও প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎ আমদানি করতে হয়।

ওই প্রকল্প দুটি চারটি জেলাজুড়ে বিস্তৃত। জেলাগুলো হলো- পশ্চিম নেপালের বাঝাং, ডোটি, দাদেলধুরা এবং আছাম। পশ্চিম সেতি প্রকল্পটি বর্ষা ঋতুতে নদীর প্রবাহ সংরক্ষণ করে সারা বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে সর্বোচ্চ চাহিদার সময়ে (ডিসেম্বর-মে) বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে এই প্রবাহ ব্যবহার করা হয়।

কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জের কারণে বছরের পর বছর ধরে নেপালের বিদ্যুৎ খাত লোকসানে থাকে। কারণ বিদ্যুতের একক ক্রেতা এবং জাতীয় বৈদ্যুতিক ইউটিলিটি ও নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি প্রতিনিয়ত রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের শিকার হয়।