পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের যৌথ ঘোষণায় রাশিয়ার বাধা

জাতিসংঘে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের একটি যৌথ ঘোষণা গ্রহণে বাধা দিয়েছে রাশিয়া। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির (এনপিটি) মাসব্যাপী সম্মেলনের শেষ দিকে রাশিয়া বেঁকে বসল। এনপিটি চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী ১৯১ দেশের প্রতিনিধিরা ১ আগস্ট থেকে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে এক মাসের আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। গত শুক্রবার থেকে চূড়ান্ত অধিবেশন শুরু হয়। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

জাতিসংঘ

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন আর্জেন্টিনার গুস্তাভো জ্লাউভিনেন। তিনি বলেন, রাশিয়া চূড়ান্ত খসড়ার কিছু বিষয় নিয়ে আপত্তি করায় সমঝোতা অর্জনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। রাশিয়ার প্রতিনিধি ইগর বিশনেভেটস্কি বলেন, চূড়ান্ত খসড়াটি ৩০ পৃষ্ঠার বেশি দীর্ঘ। এতে নানা বিষয়ে ভারসাম্যের অভাব রয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিনিধি বলেন, আমাদের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা কিছু অনুচ্ছেদে আপত্তি খুঁজে পেয়েছেন। তাছাড়া শুধু রাশিয়াই খসড়ার বিরোধিতা করেছে, এমনটা নয়।

ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হচ্ছে, রাশিয়া বিশেষ করে জাপোরিঝিয়ায় ইউক্রেনীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংক্রান্ত অনুচ্ছেদের বিরোধিতা করেছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এখন রাশিয়ান সামরিক বাহিনীর দখলে রয়েছে।

পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার রোধ: এনপিটি চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো প্রতি পাঁচ বছরে পর্যালোচনা সভা করে। এই সভার লক্ষ্য পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ করা, সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের প্রচার করা এবং পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে সহযোগিতার প্রচার করা।

সর্বশেষ খসড়ায় ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়াসহ ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আশেপাশে সামরিক কার্যকলাপ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি ইউক্রেনের পারমাণবিক সাইটগুলোর নিয়ন্ত্রণ হারানো এবং নিরাপত্তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন নেতারা।

এনপিটি স্বাক্ষরকারীরা সম্মেলনে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক পরীক্ষাসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। ২০১৫ সালের সর্বশেষ পর্যালোচনা সম্মেলনেও দেশগুলো পারমাণবিক বিষয়ে একমত হতে ব্যর্থ হয়।

এই বছরের সম্মেলনের উদ্বোধনের দিন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করেছিলেন, বিশ্ব একটি পারমাণবিক বিপদের মুখোমুখি হয়েছে, যা শীতল যুদ্ধের পর থেকে দেখা যায়নি। শুধু ভুল বোঝাবুঝি ও পারমাণবিক ধ্বংস থেকে শিক্ষা না নেওয়ার কারণে আজ মানবতা হুমকির মুখে।