রাশিয়া থেকে এখনও শত কোটি ডলারের পণ্য কিনছে যুক্তরাষ্ট্র

ইউক্রেনে হামলার জেরে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব। ইউরোপের অনেক দেশ তাতে আগ্রহী না থাকলেও মার্কিন চাপে নিষেধাজ্ঞায় শরিক হয়। এতে নানা ধরনের পণ্য বিশেষ করে খাদ্য ও জ্বালানির ঘাটতিতে পড়েছে দেশগুলো। রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে গেছে মূল্যস্ফীতি। তবে এসবের মাঝেও রাশিয়া থেকে প্রতি মাসে শত কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি বন্দরে রাশিয়ার পণ্য

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে। তখন থেকেই নিষেধাজ্ঞা কার্যক্রম শুরু হলেও এ পর্যন্ত রাশিয়া থেকে আমেরিকায় সাড়ে তিন হাজারের বেশি পণ্যের চালান এসেছে। এসবের মধ্যে যেমন কাঠ, ধাতব পদার্থ, রাবার জাতীয় জিনিস রয়েছে, তেমনি রয়েছে জ্বালানির বিভিন্ন প্রকারও। এসব পণ্য বাবদ প্রতি মাসে শত কোটি ডলারও পরিশোধ করছে জো বাইডেনের দেশ।

বাণিজ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছরে বাণিজ্য অনেক কমেছে। তারপরও এ বছর এ ধরনের তিন হাজার ৬০০টি চালান এসেছে। গত বছর এ সময়ে এসেছিল ছয় হাজারটি চালান। তবে এখনও যে পরিমাণ চালান আসছে, তাতে প্রতি মাসে ১০০ কোটি ডলার আয় করছে রাশিয়া।

রাশিয়ার একটি কার্গো জাহাজ

বার্তা সংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার যেসব পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তাতে রাশিয়ার যতটুকু ক্ষতি হয়েছে, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিজেরই। কিছু ক্ষেত্রে হয়তো মার্কিন ব্যবসায়ীরা এর বিকল্প বের করতে পেরেছেন, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এখনো তারা রাশিয়ার মুখাপেক্ষী হয়েই আছেন।

সূত্র জানায়, রাশিয়া থেকে অব্যাহতভাবে কাঠ, ধাতুসহ বিভিন্ন জিনিস আসছেই। এমনকি মার্কিন আমদানিকারকরা রাশিয়া থেকে বালিশও আমদানি করছেন। একটি হিসেবে দেখা গেছে, ফেব্রুয়ারির পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত অন্তত ১০০টি সারের চালান এসেছে। এসেছে জ্বালানির কিছু চালানও। এসব জ্বালানি সরাসরি রাশিয়া থেকে না হলেও যেসব জায়গা থেকে আসছে সেখানে রাশিয়ার পণ্য মিশ্রিত হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।

মার্কিন একজন বাণিজ্য বিশ্লেষক এই আমদানির বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, মূলত রাশিয়ার সব পণ্যের ওপরই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে বিষয়টি এমন নয়। বরং এক্ষেত্রে দেখা হয়, কোন জিনিসগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে তা বেশি প্রভাব ফেলবে, সেগুলোর ওপরই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। আর সার রপ্তানির ক্ষেত্রে সাধারণত নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগেই যেসব চুক্তি হয়েছিল, সে সবেরই চালান আসছে এখন।