এবার ইরাকে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ঢুকে পড়ল বিক্ষোভকারীরা

ইরাকের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ঢুকে পড়ে ভবনটির দখল নিয়েছে প্রভাবশালী শিয়া ধর্মগুরু ও রাজনীতিক মুকতাদা আল সদরের একদল অনুসারী। আজ দুপুরে মুকতাদা সদর পাকাপাকিভাবে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার পর তার সমর্থকরা এ কাণ্ড ঘটায়। হাজার হাজার বিক্ষোভকারী বাগদাদের গ্রিন জোন সংরক্ষিত এলাকার নিরাপত্তাবেষ্টনি ভেঙ্গে বিভিন্ন ভবন দখল করে নেয়।

বাগদাদে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটছে বিক্ষোভকারীরা

ইরাকি টিভিতে প্রদর্শিত ফুটেজে দেখা যায়, শত শত বিক্ষোভকারী বাগদাদে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বিভিন্ন কক্ষে ঘোরাফেরা করছে, স্লোগান দিচ্ছে। এর মধ্যে একটি দল প্রাসাদের বিশাল সুইমিং পুলে সাঁতার কাটছে। কেউ কেউ সেলফি তুলছে। বিশাল হলগুলোতে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে কিশোর-তরুণরা ঘুরছে। একটি দলকে জিমনেসিয়ামে শরীরচর্চা করতে দেখা যায়।

ইরাকের প্রেসিডেন্ট বারহাম সালিহ ও অন্যান্য সরকারের অন্যান্য কর্মকর্তাদের অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়নি। তবে দুপুর ও বিকেলে ইরাকি সেনাবাহিনীর কয়েকটি এমআই-১৭ সামরিক হেলিকপ্টার গ্রিন জোন থেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সরিয়ে নিয়ে যায়। বিভিন্ন সরকারি ভবনের ছাদে কয়েকবার হেলিকপ্টার উড্ডয়ন-অবতরণ করতে দেখা যায়।

ইরাক সরকার স্থানীয় সময় সোমবার বিকেল ৩:৩০ মিনিট থেকে বাগদাদে কারফিউ ঘোষণা করেছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ইরাকের অন্যান্য অঞ্চল থেকে বাগদাদ অভিমুখে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম বহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

পৃথক খবরে জানা গেছে, ইরাকে উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণে চলমান কূটনৈতিক আলোচনা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। ইরাকে নতুন করে শুরু হওয়া অস্থিরতা তেহরান ও রিয়াদের মধ্যে ছায়াযুদ্ধের প্রতিফলন বলেই মনে হচ্ছে। মুকতাদা সদর গত সপ্তাহে রিয়াদ সফর করেছেন। এরপরই তিনি রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দেন।

সবেশেষ যা জানা যাচ্ছে

খবর অনুযায়ী, সদর সমর্থকরা ইরাকের রিপাবলিকান প্যালেস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ছয়টি বিভাগের গভর্নরের কার্যালয় দখলে নেওয়ার দাবি করেছে। বাগদাদের গ্রিন জোন থেকে কয়েকটি দূতাবাসের কর্মীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

গ্রিন জোন, সেন্ট্রাল জোন, কাজিমিয়া, আল শুরা ও জামিলিয়া এলাকায় সদরপন্থী মাহদী আর্মি ও প্রতিপক্ষ পপুলার মোবিলাইজেশন ফ্রন্টের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৭ জন নিহত ও ২৬০ জন আহত হয়েছে।

বসরা ও নাজাফ বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বাগদাদ বিমানবন্দরের প্রবেশপথ সদর সমর্থকরা অবরোধ করে রেখেছে।

আরব আমিরাত সরকার ইরাকে সেদেশের বিমান যাতায়াত বন্ধ ঘোষণা করেছে। ইরান সরকার সেদেশের নাগরিকদের অবিলম্বে ইরাক ত্যাগের নির্দেশনা দিয়েছে।