বাংলাদেশিরা ঘুষ দিয়ে চাকরি করছে পশ্চিমবঙ্গে?

বাংলাদেশের নাগরিকরা নাকি ভারতীয় সেজে পশ্চিমবঙ্গের স্কুলে চাকরি করছে। বলা হচ্ছে, অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে কাগজপত্র তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে তারা সেখানে চাকরি করছেন। ভারতের একটি সংবাদমাধ্যমে এমন দাবি করা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের স্কুলগুলোতে ঘুষ দিয়ে বাংলাদেশিরা চাকরি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে

সম্প্রতি পুলিশের হাতে আটক হন পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিভিন্ন স্থান থেকে তার কোটি কোটি টাকাসহ বেশকিছু সম্পদ জব্দ করা হয়। এরমধ্যেই তার ভাগ্নি জামাই প্রসন্ন রায়কে জেরা করে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।

সিবিআই দাবি করে, প্রসন্নের মাধ্যমেই বেশকিছু বাংলাদেশি নারী-পুরুষ অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে সেখানে ভারতীয় সেজে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অংশে চাকরি নিয়েছে। ঝামেলা এড়াতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদেরকে পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য অবশ্য তাদের কাছ থেকে প্রচুর টাকা নেওয়া হয়েছে।

পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও প্রসন্ন রায়

সিবিআই সূত্রে জানা গেছে, এ প্রক্রিয়ায় যারা চাকরি পেয়েছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে। তাদের সবাইকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পার্থের ভাগ্নিজামাই প্রসন্নকে প্রাথমিক জেরা করেই তদন্তকারীরা বুঝতে পারেন, নিয়োগ দুর্নীতির তিনি শীর্ষস্থানীয় একজন। একাধিক ট্রাস্টের মাধ্যমে বাংলাদেশে টাকা পাচার করেছেন তিনি। পাশাপাশি বাংলাদেশি বহু তরুণ-তরুণীকে অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্কুলে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন।

বাংলাদেশি লোকজনকে ভারতের আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ‘বিশ্বাস’ নামের এক বাংলাদেশির। মূলত বিশ্বাসই বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীদের নির্বাচিত করে অনুপ্রবেশ করানোর দায়িত্ব পালন করতেন। ভারতের স্কুলে যারা চাকরি করতে আগ্রহী এমন ব্যক্তিদের সীমানা পার করিয়ে দিতেন বিশ্বাস। তারপর তাদের এনে তোলা হতো রাজারহাট-নিউটাউনের একটি ফ্ল্যাটে। এখানে ‘সব’ করে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল প্রসন্নের।

অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে আসা লোকজনকে ‘ভারতীয়’ সাজাতে প্রশংসাপত্র, আধার কার্ড, ভোটার কার্ডসহ যত কাগজপত্র প্রয়োজন হতো সবই তৈরি করে দেওয়া হতো। এরপর তাদের বিভিন্ন পরীক্ষার ফর্ম পূরণ করানো হতো প্রসন্নের সল্টলেকের অফিসে বসেই। সব কিছু শেষ করে তাদের নামের তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হতো যথাস্থানে। প্রসন্ন এভাবে যতজনের জন্য সুপারিশ করেছিলেন, তারা সকলেই চাকরি পেয়েছে। আপাদমস্তক এভাবে পরিচয় পাল্টে চাকরি করতে দেওয়ার ঘটনায় তদন্তকারীরাও রীতিমতো হতবাক।

অবশ্য অভিযুক্ত প্রসন্নের আইনজীবীর দাবি, তাদের মক্কেলকে জোর করে এসব স্বীকার করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এসবের কোনো কিছুর সাথে প্রসন্নের কোনো ধরনের কোনো যোগাযোগ নেই।