পশ্চিমা রাজনৈতিক প্রোপাগাণ্ডার শিকার তুরস্ক!

তুরস্কের আধিপত্য খর্ব করতে পশ্চিমা রাজনৈতিক প্রোপাগাণ্ডা তৎপর রয়েছে। আর সেই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে গ্রিসকে। মূলত পশ্চিমা মিত্ররাই এখন তুরস্ককে প্রতিরোধ করতে চাইছে। কারণ তুরস্কের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি তাদের সহ্য হচ্ছে না। এ কারণে গ্রিসকে দিয়ে বারবার হয়রানি করা হচ্ছে আঙ্কারাকে। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের পতাকা

টিআরটি ওয়ার্ল্ডের সাবেক তুর্কি সেনা কর্মকর্তা উলাস পেহলিভান এক বিশ্লেষণে বলেন, গ্রিস রাশিয়ার কাছ থেকে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৩০০ কিনেছিল। তখন আামেরিকা কিছুই বলেনি। কিন্তু তুরস্ক যখন এস-৪০০ কিনল তখন যুক্তরাষ্ট্র কাউন্টারিং অমেরিকাস অ্যাডভারসারিজ থ্রো স্যাংশনস অ্যাক্টের (সিএএটিএসএ) অধীনে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করে। এটা তুরস্কের প্রতি আমেরিকার একটি বৈষম্যমূলক আচরণ।

পেহলিভান টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে বলেন, সিএএটিএসএ আইনটি হল একটি মার্কিন আইন, যা উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া এবং ইরানের মতো দেশগুলোকে লক্ষ্য করে তারা প্রয়োগ করে।

এস-৪০০

এস-৪০০ ইস্যু ছাড়াও ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনসহ অন্যান্য বিষয়েও পশ্চিমের সাথে তুরস্কের মতবিরোধ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে আক্রমণের জন্য তুর্কি ভূমি ব্যবহার করতে চেয়েছিল, কিন্তু আঙ্কারা আমেরিকান সৈন্যদের স্থান দিতে রাজি হয়নি।

ওই বিশ্লেষক মনে করেন, উত্তর সাইপ্রাসকে বাদ দিয়ে দক্ষিণ সাইপ্রাসকে ইইউতে যোগ দেওয়ানোর চেষ্টা চালায় গ্রিক প্রশাসন। কিন্তু তুরস্কের কারণে সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। অপরদিকে উত্তর সিরিয়ায় পিকেকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর একটি শাখা ওয়াইপিজিকে সমর্থন দিয়ে আসছিল গ্রিস। কিন্তু তুরস্কের কয়েক দশকের অভিযানে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে ওয়াইপিজি। এতেও ক্ষুব্ধ পশ্চিমা বাহিনী ও গ্রিস।

তুর্কি নিরাপত্তা বিশ্লেষক আবদুল্লাহ আগার দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, পূর্ব ভূমধ্যসাগরে গ্যাসের মজুদে তুরস্কের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা ভালোভাবে নিচ্ছে না গ্রিস। এ নিয়ে পশ্চিমের সাথেও আঙ্কারার কিছু মতবিরোধ রয়েছে। এসব ক্রমবর্ধমান বিরোধে গ্রিস আঙ্কারার প্রতি চরম বিরক্ত, তেমনি বিরক্ত পশ্চিমারাও। এজন্য গ্রিসকে তারা তুরস্কের বিরুদ্ধে প্রক্সি রাষ্ট্রের মতো ব্যবহার করছে।

গত মাসে গ্রিস নির্লজ্জভাবে তুরস্কের যুদ্ধবিমানে রাশিয়ার এস-৩০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ব্যবহার করায় আঙ্কারা-এথেন্সের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আঙ্কারার মতে, গ্রিস ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ ক্রেটের কাছে মার্কিন বি-৫২ বোমারু বিমান ব্যবহার করে তুর্কি জেটগুলোকে হয়রানি করে।

ঘটনার পর তুরস্ক ব্রাসেলসে ন্যাটো সদর দপ্তরে অভিযোগ জানায়। কিন্তু ন্যাটো প্রশাসন কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে গ্রিসের নিন্দা জানানো হয়নি। অথচ রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ কেনার জন্য তুরস্কের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।