'আজকের এই বৈরী আবহাওয়ার জন্যও বিএনপি দায়ী'

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার না‌সিরনগরে হিন্দুপল্লীতে হামলা এবং ভাঙচুরে বিএনপি জড়িত বলে মন্তব্য করেছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হা‌নিফ। তার বক্তব্যের জবাবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেছেন, 'যা কিছু ঘটছে সব কিছুর জন্য বিএনপি দায়ী। আওয়ামী লীগের নেতারা বলবেন, আজকের এই বৃষ্টি-বাদল এবং বৈরী আবহাওয়ার জন্যও বিএনপি দায়ী।'

৫ নভেম্বর শনিবার গুলশানস্থ বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। এ সময় তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার না‌সিরনগরে হিন্দুপল্লীতে ঘটে যাওয়া হামলার বিষয়ে নানা বিষয় তুলে ধরেন। একপর্যায়ে সাংবাদিকরা হানিফের বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এভাবেই নিজের অভিমত তুলে ধরেন তিনি। বিএনপি নেতা মেজর হাফিজ বলেন, 'দেশের আবহাওয়া গতকাল থেকে খারাপ। ঝিরিঝির বৃষ্টি হচ্ছে। বঙ্গোপসাগরে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সম্ভব হলে সরকারি দলের নেতারা বলবেন এসবের জন্যও বিএনপি দায়ী।'

একটু মজা করে এই বিএনপি নেতা বলেন, 'আওয়ামী লীগের নেতারা হয়তো বলবেন হিন্দুপল্লীতে হামলার ঘটনায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দায়ী। তারা বলবেন, জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, ২০১৬ সালে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করবে। সত্যি বলতে কি আওয়ামী লীগের নেতাদের এসব হাস্যকর কথা সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে না।'

নাসিরনগরে হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, হিন্দু জনগোষ্ঠীসহ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ এই সরকারের উচিত পদত্যাগ করা। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রয়োজন। হামলার ঘটনায় ক্ষমতাসীন নেতাকর্মীদের বহিষ্কারের মধ্যদিয়ে কারা জড়িত বিষয়টি বোঝা গেছে।'

তিনি বলেন, 'বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে বিএনপি নাসিরনগরে হিন্দু ধর্মের অনুসারীদের মন্দির ও বাড়িঘরে দুর্বৃত্তদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহমর্মিতা জানাতে গিয়েছিল। আমরা সেই সব ধ্বংসস্তুপ দেখে মর্মাহত। বিএনপি অবশ্যই এই ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। সেই সঙ্গে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছে।'

হামলার পর গত শুক্রবার বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল নাসিরনগরের হিন্দুপল্লী পরিদর্শন করে। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন মেজর হাফিজ। এছাড়াও ছিলেন দলটির সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী গৌতম চক্রবর্তী, রুমি ফারহানা, বিএনপি নেতা একরামুজ্জামানসহ আরো অনেকে।

গত ২৯ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুসলমানদের পবিত্রস্থান পবিত্র কাবা শরীফ নিয়ে ব্যাঙ্গ চিত্র করে এক হিন্দু ছেলে পোস্ট দেন। অভিযোগ আছে, ফেসবুকের ওই ঘটনার পর ৩০ অক্টোবর স্থানীয় কলেজ মোড় এবং আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে দুটি পৃথক বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। সমাবেশ থেকেই শত শত মানুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও ঘরবাড়িতে হামলা চালায়। এরপর ৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতেও ওই এলাকার হিন্দুদের অন্তত ছয়টি বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা।

আপনি আরো পড়তে পারেন

নিম্নচাপে উত্তাল সাগর, বন্দরে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত

এবার নেত্রকোনায় মন্দিরে অগ্নিসংযোগ, আটক ১

ওবায়দুল কাদের: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনায় সরকার কঠোর অবস্থানে

নয়াপল্টনে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছে বিএনপি

বিকল্পস্থানে সমাবেশের কথা ভাবছে বিএনপি