দুই সপ্তাহে ৪৪ ফিলিস্তিনি ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল

দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমের ব্লক-সি এলাকার কয়েক ডজন স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে। ইসরায়েলের অনুমতি না থাকার অজুহাতে ৩০ আগস্ট থেকে ১২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অন্তত ৪৪টি ফিলিস্তিনি ভবন ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয় (ওসিএইচএ) একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। খবর দ্য নিউ আরব।

দুই সপ্তাহে ৪৪ ফিলিস্তিনি ভবন গুড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল

মানবাধিকার সংস্থাগুলো কয়েক বছর ধরে অসংখ্য প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এসব প্রতিবেদনে দেখা যায়, দখলকৃত জেরুজালেমে অত্যন্ত জনাকীর্ণ জীবনযাপনের অবস্থা সত্ত্বেও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ খুব কমই ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের নতুন স্থাপনা তৈরির অনুমতি দিচ্ছে।

পূর্ব জেরুজালেমে নয়টি স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়েছে, যার মধ্যে পাঁচটি বাড়ি ভেঙ্গে ফেলতে করতে ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের বাধ্য করেছে ইসরায়েল। অন্যান্য ৩৫টি ভবনের মধ্যে ১৯টি ফিলিস্তিনি মালিকদের কাছ থেকে সতর্কতা ছাড়াই কেড়ে নেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে গড়ে প্রতি দুই সপ্তাহে চারটি ফিলিস্তিনি স্থাপনা জব্দ করা হয়েছে, যা ইসরায়েলি ভূমি দখলের পথ তৈরি করছে।

১৯৪৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেম দখল করে রেখেছে ইসরায়েল। তারা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এলাকা জুড়ে বসতি নির্মাণ করেছে। প্রায় ৭ লাখ ইহুদি বসতি স্থাপন করে দখল করা জায়গায় বসবাস করছে।

ফিলিস্তিনিরা পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র চায় এবং এই বসতিগুলোকে শান্তির পথে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে দেখে আসছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও বসতিগুলোকে অবৈধ বলে মনে করে। ১৯৯৫ সালের অসলো চুক্তি অনুযায়ী, অধিকৃত পশ্চিম তীরকে তিনটি অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়- এরিয়া এ, এরিয়া বি এবং এরিয়া সি।

এরিয়া এ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণের অধীনে নিয়ন্ত্রিত হয়। এরিয়া বি এর প্রশাসন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রণ করলেও নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ করে ইসরায়েল। তাছাড়া এরিয়া সি ইসরায়েলের প্রশাসনিক ও নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণের অধীনে পরিচালিত হয়।

শহরের ফিলিস্তিনি বাসিন্দারা পদ্ধতিগত বৈষম্যের সম্মুখীন। বিশেষ করে যখন নতুন বাড়ি তৈরি করা কিংবা বিদ্যমান বাড়িগুলো প্রসারিত করার বিষয় সামনে আসে, তখন তারা অত্যন্ত কঠিন সংকটে পড়েন।