রাশিয়ার নাগরিকত্ব পেলেন মার্কিন নজরদারির তথ্য ফাঁসকারী স্নোডেন

সাবেক ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসএ) কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেন রাশিয়ার নাগরিকত্ব পেয়েছেন। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি ডিক্রিতে সই করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, যাতে স্নোডেনসহ ৭৫ জন বিদেশিকে রুশ নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে। খবর রয়টার্স।

এডওয়ার্ড স্নোডেন

২০১৩ সালে স্নোডেন মার্কিন ফোন ও ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোর পরিকাঠামোর মধ্য দিয়ে ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির তথ্য সংগ্রহের নথি ফাঁস করেছিলেন। তিনি মার্কিন-মিত্র দেশগুলোর নেতাসহ বিদেশী কর্মকর্তাদের ওপর আমেরিকান নজরদারি সম্পর্কেও বিশদ তথ্য প্রকাশ করেন। স্নোডেনের মতে, তিনি এসব তথ্য প্রকাশ করেছেন কারণ তিনি মনে করতেন, মার্কিন গোয়েন্দা সম্প্রদায় অনেক দূরে চলে গেছে এবং ভুলভাবে নাগরিক স্বাধীনতা লঙ্ঘন করেছে।

এরপর থেকেই স্নোডেন বিভিন্ন দেশে পালিয়ে বেড়াতে থাকেন। এদিকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে স্নোডেনকে ফৌজদারি বিচারের মুখোমুখি করতে যুক্তরাষ্ট্র তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। তথ্য ফাঁসের ওই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্র তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছে, তাতে তার অন্তত ৩০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। ২০১৭ সালে পুতিন এ ব্যাপারে মন্তব্য করেছিলেন, মার্কিন গোপননীতি ফাঁস করা ছিল স্নোডেনের ভুল। তবে তিনি কোনোভাবেই বিশ্বাসঘাতক নন।

২০১৩ সালে মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস করে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন স্নোডেন

দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ ব্যক্তির তালিকায় রয়েছেন স্নোডেন। বর্তমানে তিনি রাশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে তাকে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়। এর প্রায় দুই বছর পর এবার তাকে নাগরিকত্ব দেওয়া হলো।

নাগরিকত্ব পাওয়ার খবরে স্নোডেন এক টুইটে বলেন, দুই বছরের অপেক্ষা এবং প্রায় দশ বছরের নির্বাসনের পর একটু স্থিতিশীলতা আমার পরিবারের জন্য একটি পার্থক্য তৈরি করবে। আমি তাদের জন্য এবং আমাদের সকলের গোপনীয়তার জন্য প্রার্থনা করি।

স্নোডেনের আইনজীবী আনাতোলি কুচেরেনা রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ নভোস্তিকে বলেছেন, স্নোডেনের স্ত্রী লিন্ডসে মিলসও তার সাথে রাশিয়ায় বসবাস করছেন, তিনিও রাশিয়ান পাসপোর্টের জন্য আবেদন করবেন। এ দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে।

এদিকে স্নোডেনকে রুশ নাগরিকত্ব দেওয়ার খবর প্রকাশের পর মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, আমাদের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। স্নোডেনের উচিত যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে এসে বিচারের মুখোমুখি হওয়া।