‘ছয় দশকে প্রথমবারের মতো পারমাণবিক ঝুঁকির মুখে বিশ্ব’

ইউক্রেনে গত ফেব্রুয়ারিতে হামলা শুরুর পরের মাস থেকেই পরমাণু অস্ত্র প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ছয় মাসে সে হুমকি তো কমেইনি, বরং বিভিন্ন উপলক্ষে হুমকি আরও জোরদার হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ১৯৬২ সালে কিউবান ক্ষেপণাস্ত্র সংকটের পর এই প্রথম পরমাণু হামলা ঝুঁকির মুখে পড়েছে বিশ্ব। খবর আল জাজিরা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

ডেমোক্র্যাটিক পার্টির একটি অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, কিউবার ক্ষেপণাস্ত্র সংকট ১৯৬২ সালে বিশ্বকে বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছিল। সে সময় তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন কিউবায় পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছিল। ফলে দুই দেশের মধ্য পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এরপর থেকে আমরা আর এই ধরনের পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কার মুখে পড়িনি। বর্তমানে রুশ প্রেসিডেন্ট আবারো সেই পরিস্থিতি তৈরি করেছেন।

জো বাইডেন বলেন, ইউক্রেন ইস্যুতে পুতিন পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে মজা করছেন না। পুতিন যখন কৌশলগত পরমাণু, জৈবিক বা রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার সম্পর্কে বলেন তখন তিনি আসলে রসিকতা করেন না। কারণ তার সামরিক বাহিনী এখন উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল। তবে এ অবস্থা থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায় তা বের করতে মার্কিন কর্মকর্তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন বাইডেন।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন

এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও একইভাবে পশ্চিমা দেশগুলোকে সতর্ক করেছিলেন। মার্কিন কর্মকর্তারা কয়েক মাস ধরে সতর্ক করে আসছেন, ইউক্রেনের বিভিন্ন অংশে বিপর্যয়ের মুখে পড়ায় রাশিয়া সেখানে ব্যাপক ধ্বংসাত্মক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।

এদিকে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বৃহস্পতিবার বলেছেন, পুতিন বুঝতে পেরেছেন যে রাশিয়ার পরমাণু হামলাকে বিশ্ব কখনোই ক্ষমা করবে না। কারণ এ অস্ত্র ব্যবহারের পর তিনি আর নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন না।

গত মাসের শেষদিকে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলে গণভোটের ব্যবস্থা করেন পুতিন। তারপর সে ফলের ওপর ভিত্তি করে দ্রুত ওই চারটি অঞ্চলকে নিজের সাথে সংযুক্ত করে নেওয়ার ঘোষণা দেন।

পুতিন বলেন, রাশিয়ার সাথে সংযুক্ত এ অঞ্চলগুলো রক্ষায় তিনি তার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবেন। এমনকি প্রয়োজনে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারেও পিছপা হবেন না। পশ্চিমা বিশ্ব পুতিনের এ গণভোট, সংযুক্তি, পরমাণু হামলার হুমকি সবকিছুরই কড়া সমালোচনা করছে।

১৯৬২ সালে ১৩ দিনের সঙ্কটে যুক্তরাষ্ট্র যখন আবিষ্কার করে, তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন কিউবায় পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে, সে সময়েই বিশ্ব পরমাণু অস্ত্রের মাধ্যমে ধ্বংসের সবচেয়ে কাছাকাছি পৌছে গিয়েছিল বলে মনে করা হয়। পরে অবশ্য কূটনীতিক উপায়ে সেই বিপর্যয় এড়ানো হয়।