কারাগারে থেকেই শান্তি নোবেল জয় বিয়ালিয়াৎস্কির

এবার মানবাধিকার নিয়ে কাজ করার জন্য দেওয়া হয়েছে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার। ব্যক্তি হিসেবে এ পুরস্কার পেয়েছেন বেলারুশের মানবাধিকারকর্মী অ্যালেস বিয়ালিয়াৎস্কি। তার সঙ্গে যৌথভাবে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া দেশ ইউক্রেন ও রাশিয়ার দুটি মানবাধিকার সংগঠনকে। শান্তি নোবেল পাওয়া সংগঠন দুটি হচ্ছে রাশিয়ার মানবাধিকার সংস্থা মেমোরিয়াল ও ইউক্রেনের মানবাধিকার সংস্থা সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিস। তবে ব্যক্তি হিসেবে পুরস্কার পাওয়া কে এই অ্যালেস বিয়ালিয়াৎস্কি!

এবারের শান্তি নোবেলজয়ী বেলারুশের অ্যালেস বিয়ালিয়াৎস্কি

নোবেল পুরস্কার ঘোষণার সঙ্গেই জানা গেছে, বিয়ালিয়াৎস্কি বেলারুশের মানবাধিকারকর্মী। তবে যেনতেন মানবাধিকার কর্মী নন তিনি। কারণ, তাকে কারাগারে আটকে রেখেছে বেলারুশ সরকার। সেটি বিনা বিচারেই। অর্থাৎ, কারাগারে থেকেই শান্তি নোবেল পুরস্কার পেলেন ৬০ বছরের বিয়ালিয়াৎস্কি।

বিয়ালিয়াৎস্কি বেলারুশের স্বনামধন্য মানবাধিকার সংস্থা ভিয়াসনা (বসন্ত) মানবাধিকার কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৯৬ সালে বেলারুশে স্বৈরাচারী নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসা জনতাকে নৃশংস দমনপীড়নের ঘটনায় পরিপ্রেক্ষিতেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ভিয়াসনা।

সংগঠনটি এখনও জেলে বন্দী বিক্ষোভকারী ও তাদের পরিবারের সমর্থনে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি বেলারুশ কর্তৃপক্ষের হাতে রাজনৈতিক বন্দী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে।

নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির প্রধান বেরিট রেইস-অ্যান্ডারসেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণার সময় বিয়ালিয়াৎস্কি সম্পর্কে বলেন, ‘নিজের দেশে গণতন্ত্রের প্রচার ও শান্তিপূর্ণ উন্নয়নে জীবন উৎসর্গ করেছেন বিয়ালিয়াৎস্কি।

মূলত মানবাধিকার নিয়ে কাজ করার জন্যই বিয়ালিয়াৎস্কিকে ২০১১ সালে কর ফাঁকির অভিযোগে আটক এবং দোষী সাব্যস্ত করে তিন বছর কারাবন্দি রাখা হয়। ২০১৪ সালে তিনি মুক্তি পান। যদিও বরাবরই কর ফাঁকির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

এরপর ২০২০ সালে লুকাশেঙ্কোকে কারচুপির নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছেন অভিযোগে বিক্ষোভের পর তাকে আবার আটক করা হয়। এরপর থেকে বিনাবিচারেই কারাগারেই আছেন বিয়ালিয়াৎস্কি।

নোবেল কমিটি বলেছে, দুঃসহ ব্যক্তিগত নিপীড়ন সয়েও বিয়ালিয়াৎস্কি বেলারুশের মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াইয়ে এক ইঞ্চি ছাড় দেননি।  

প্রসঙ্গত, ১৯৯৪ সাল থেকে স্বৈরশাসকের মতো বেলারুশ শাসন করছেন লুকাশেঙ্কো। পশ্চিম ইউরোপের শেষ স্বৈরশাসক হিসেবে আখ্যায়িত লুকাশেঙ্কো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র।

ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর জন্য প্রথম থেকেই রুশ সেনাদের জায়গা দিয়েছে বেলারুশ। দিয়েছে অস্ত্রসহ সামরিক সরঞ্জাম মজুদ রাখার জায়গা।