সৌদি আরব: তেল নিয়ে রাজনীতি করে না রিয়াদ

যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর বিরোধিতা সত্ত্বেও তেল উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওপেকপ্লাস। যুক্তরাষ্ট্র এর জন্য মূলত সৌদি আরবকেই দায়ী করছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইর বলেছেন, জ্বালানির দাম বৃদ্ধির জন্য ওপেকের উৎপাদন হ্রাসের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং যুক্তরাষ্ট্রের অপর্যাপ্ত পরিশোধন ক্ষমতার কারণে খরচ বেড়ে গিয়েছিল। খবর আরব নিউজ।

আদেল আল-জুবেইর

ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আদেল আল-জুবেইর বলেন, সৌদি আরব তেল বা তেলের সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনীতি করে না। তেল আমাদের কাছে একটি অস্ত্র নয়, বরং আমরা তেলকে একটি পণ্য হিসেবেই দেখি। আমরা বিশ্ব অর্থনীতিকে লক্ষ্য করতে থাকি, যেখানে আমাদের একটি বিশাল অংশীদারি রয়েছে।

সৌদি আরব তেলের দ্বারা কারো ক্ষতি করবে, এমন ধারণা একেবারেই সঠিক নয় দাবি করে আদেল আল জুবেইর বলেন, যথাযথ সম্মান দিয়েই বলছি, যুক্তরাষ্ট্রে তেলের উচ্চ মূল্যের কারণ হল আপনার পরিশোধন ব্যবস্থার ঘাটতি। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এ ঘাটতি চলে আসছে। কিন্তু আপনারা গত কয়েক দশকে কোনো শোধনাগার তৈরি করেননি।

সৌদির অপরিশোধিত তেল

তিনি দাবি করেন, আগে মোটামুটি থাকলেও করোনা মহামারির সময় চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় মার্কিন তেল পরিশোধন ক্ষমতাও হ্রাস পায়। এমনকি কিছু কিছু স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের শোধনাগার বন্ধ হয়ে গেছে। করোনা শেষে যখন আবারো চাহিদা বেড়েছে, তখন এর সাথে তাল মেলাতে পারেনি উৎপাদনে থাকা তেল শোধনাগারগুলো।

আদেল আল-জুবেইর ব্যাখ্যা করেন, পরিশোধন ক্ষমতার এই ঘাটতির কারণেই যুক্তরাষ্ট্রে পেট্রোলের ঘাটতি তৈরি হয়েছে এবং ফলস্বরূপ পেট্রোলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরিশোধিত তেল সরবরাহ হ্রাস বৃদ্ধি এবং চাহিদার মৌলিক বিষয়গুলোর সাথে এর কোনো ধরনের কোনো সম্পর্ক নেই।

সৌদি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ওপেক সদস্য দেশগুলো এবং রাশিয়া ভোক্তা এবং উৎপাদকদের সুবিধার্থে তেলের বাজারে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ কারণেই গত বছর যখন আমরা ঘাটতি দেখেছিলাম, তখন আমরা ধীরে ধীরে উৎপাদন বাড়িয়েছিলাম। এখন আবার ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি হওয়াতে আগামী নভেম্বর থেকে তেল উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নইলে এটা কেবল উৎপাদকদের জন্যই নয়, বরং ভোক্তাদের এবং বিশ্ব অর্থনীতির জন্যও ক্ষতিকর হবে।

এদিকে ওপেক প্লাসের উৎপাদন হ্রাসের কারণে তেলের দাম বাড়বে এমন জল্পনাকেও অস্বীকার করেছেন আদেল আল জুবেইর। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি, অপরিশোধিত তেলের চাহিদা কমে যাচ্ছে। তাই আমরা একটি সম্ভাব্য একটি পতন এড়াতে চাই, যাতে ভোক্তা বা উৎপাদকদের কোনো উপকার নেই।

এক্ষেত্রে আমরা গত বছরের মতো পরিস্থিতি সাবধানে পর্যবেক্ষণ করব এবং বাজারের কী প্রয়োজন তা আমরা নির্ধারণ করব। আমরা এমন সিদ্ধান্তটি শুধু এক বছর ধরে নেইনি বরং গত কয়েক দশক ধরে এমনটাই করেছি।