আপনি পড়ছেন

১৯৪৮ সালে মিয়ানমারে (তৎকালীন বার্মা) ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে। এরপর থেকে দেশটির বিভিন্ন অংশে অব্যাহতভাবে গৃহযুদ্ধ চলতে থাকে। এতে বেশিরভাগ সময়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের মুসলমানরা। তারপরও আন্তর্জাতিক ফোরামে সমর্থন লাভের বিনিময়ে মিয়ানমারকে ধারাবাহিকভাবে অস্ত্রশস্ত্রসহ সব ধরনের সহায়তা দিয়ে গেছে ইসরায়েল। খবর মিডলইস্ট মনিটর।

israel myanmar tieইসরায়েলের সাথে মিয়ানমারের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই ভালো

সম্প্রতি ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নথিপত্রের বরাতে ইসরায়েলি গণমাধ্যম হারেৎজে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২৫ হাজার পৃষ্ঠার নথিতে ১৯৫০ সাল থেকে ১৯৮০ এর দশকের শুরু পর্যন্ত ইসরায়েলি সরকার কীভাবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে সমরাস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়েছে তার বিশদ বিবরণ রয়েছে।

গৃহযুদ্ধের ব্যাপারে সবকিছু জানা থাকা সত্ত্বেও ইসরায়েল বেশকিছু মারাত্মক অস্ত্র মিয়ানমারকে সরবরাহ করেছে। তারা বিষয়টিকে নিজেদের পক্ষে সমর্থন টানার উপায় হিসেবে দেখেছে।

১৯৪৮ সালে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মিয়ানমারের পরিস্থিতি অবনতি দিকে যেতে থাকে। ১৯৫২ সালের সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন-গুরিয়নের কাছে পাঠানো একটি বার্তায় বলা হয়, বার্মার গৃহযুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং রাজ্য বাজেটের ৫৫ শতাংশই প্রতিরক্ষার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।

ভৌগোলিক কারণে মিয়ানমারে, বিশেষ করে তাদের গৃহযুদ্ধে ইসরায়েলে কোনো স্বার্থ ছিল না। তারপরও আন্তর্জাতিকভাবে সমর্থন পাওয়ার আশায় তেলআবিব মিয়ানমারকে এ অস্ত্র দিয়ে গেছে। কোনো ইসরায়েলি প্রতিনিধিই বিষয়টিতে আপত্তি জানায়নি।

১৯৫৪ সালের মার্চে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক, ওয়াল্টার আইটান আইডিএফের চিফ অব স্টাফ মোশে দায়ানকে লিখেছিলেন, এশিয়ায় বার্মা ইসরায়েলের সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও বার্মিজ সেনাবাহিনীর মধ্যে সম্পর্ক কূটনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। আমি বলতে বাধ্য, ইসরায়েল ও বার্মার সম্পর্কের বর্তমান অবস্থায় বার্মিজ সেনাবাহিনীর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা আসলে সম্ভব নয়।

এরপর বিভিন্ন সময়ে দুই সরকারের মধ্যে সম্পাদিত বিভিন্ন চুক্তিতে ৩০টি যুদ্ধবিমান, লক্ষাধিক রাউন্ড গোলাবারুদ, দেড় হাজার ন্যাপাম বোমা, ৩০ হাজার রাইফেল ব্যারেল, হাজার হাজার মর্টার শেলসহ বহু ধরনের সামরিক সরঞ্জাম মিয়ানমারকে দেওয়া হয়েছিল।

এছাড়াও, বিভিন্ন সময়ে কয়েক ডজন ইসরায়েলি বিশেষজ্ঞকে মিয়ানমারে প্রশিক্ষণ মিশনে পাঠানো হয়েছে। মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তারাও প্রশিক্ষণ নিতে ইসরায়েল সফর করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, এভাবেই মিয়ানমারের সেনারা রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা ও তাদের ভূমি দখলের ক্ষেত্রে ইসরায়েলের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে অনুপ্রাণিত হয়।

দীর্ঘদিন ধরে দেশটিতে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চললেও ২০১৭ সালে ব্যাপক আকার ধারণ করে। ওই বছরের ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২৪ হাজার রোহিঙ্গা মুসলমানকে হত্যা করেছে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় বাহিনী, লাখ লাখ মানুষের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়েছে, ১৮ হাজার নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং এক লাখ ১৪ হাজারের বেশি বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে ইসরায়েল ক্ষ্যন্ত হয়। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০১৯ সালের জুলাইয়ে ঘোষণা করে, মিয়ানমার আর ইসরায়েলে অস্ত্র প্রদর্শনীতে প্রতিনিধি পাঠাতে পারবে না।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.