রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাস: ভোট দেয়নি চীন-ভারত

ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল রাশিয়ার সাথে সংযুক্ত করার বিষয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি নিন্দা প্রস্তাব পাস হয়েছে। বুধবার (১২ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত এ ভোটে ১৯৩ সদস্যের তিন-চতুর্থাংশই রাশিয়ার বিপক্ষে ভোট দেয়। তবে চীন-ভারত ভোট দেয়নি কোনো পক্ষেই। নিন্দা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে রাশিয়াসহ পাঁচ দেশ। খবর আল জাজিরা ও বিবিসি।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাস হয়

নিন্দা প্রস্তাব গৃহীত হওয়ায় জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, রাশিয়ার এ সংযুক্তিকরণের চেষ্টা মূল্যহীন। স্বাধীন দেশগুলো কখনোই এটাকে স্বীকৃতি দেবে না। ইউক্রেনও শিগগিরই নিজেদের ভূমি ফিরিয়ে আনবে।

গত মাসের শেষ দিকে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, খেরসন, লুহানস্ক ও জাপোরিঝিয়াকে রাশিয়া গণভোটের মধ্য দিয়ে নিজেদের সাথে সংযুক্ত করে নেয় রাশিয়া। বিশ্বের অধিকাংশ দেশই মস্কোর এ কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে। এ গণভোট ও অন্তর্ভুক্তিকরণকে অবৈধ উল্লেখ করে বুধবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়। প্রস্তাবটি উত্থাপন করে আলবেনিয়া। এ প্রস্তাবে ১৪৩টি দেশ রাশিয়ার বিপক্ষে ভোট দেয়।

ইউক্রেনের চার অঞ্চল সংযুক্তিতে সই করছেন পুতিন

গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর রাশিয়ার বিরুদ্ধে এটিই ছিল সর্বোচ্চ পরিমাণে ভোট। তবে এ প্রস্তাবে বরাবরের মতোই নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে যায় চীন ও ভারত। এ দুটি দেশসহ মোট ৩৫টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। অন্যদিকে প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোটে রাশিয়ার সাথে যোগ দেয় চারটি দেশ- সিরিয়া, নিকারাগুয়া, উত্তর কোরিয়া ও বেলারুশ।

ভোটের পর জাতিসংঘে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়্যাস বলেন, ভোটের এই ফলই দেখাচ্ছে রাশিয়া বিশ্বকে ভয় দেখাতে পারে না। অন্যদিকে জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া ভোটের আগে এ ধরনের প্রস্তাবকে প্রকাশ্য উস্কানিমূলক আখ্যা দিয়ে সাধারণ পরিষদে বলেন, এটি সংকটের কূটনৈতিক সমাধানের পক্ষে সব ধরনের প্রচেষ্টাকে ধ্বংস করে দিতে পারে।

এদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের ডেপুটি রাষ্ট্রদূত গেং শুয়াং বলেছেন, সাধারণ পরিষদের দ্বারা গৃহীত যেকোনো পদক্ষেপ পরিস্থিতির উত্তেজনা কমানোর জন্য সহায়ক হওয়া উচিত, সংলাপের দ্রুত পুনরুদ্ধারের জন্য সহায়ক হওয়া উচিত। কিন্তু বুধবারের প্রস্তাবটি তাদের কাছে সে রকম কিছু মনে হয়নি।

২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের ক্রিমিয়া দখল করার পরও জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অনুরূপ আরেকটি ভোট নেওয়া হয়েছিল। সে সময় প্রস্তাবের পক্ষে ১০০টি ভোট, বিপক্ষে ১১টি এবং ৫৮ সদস্যের বিরত থাকার মাধ্যমে গণভোটকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়।