খেরসন থেকে ৬০ হাজার মানুষ সরিয়ে নিচ্ছে রুশ প্রশাসন

কয়েকদফা ব্যর্থ হবার পর খেরসনে আবারও আক্রমণ শুরু করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যমেয়াদি নির্বাচনের আগে খেরসন পুনর্দখলে ইউক্রেনের এটাই শেষ চেষ্টা বলে মনে করছেন রুশ কর্মকর্তারা। তারা ইউক্রেনের হামলা থেকে সুরক্ষার জন্য খেরসনের ৬০ হাজার অধিবাসীকে দনিপার নদীর ডান দিক থেকে বাম দিকে সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। আগামী সাতদিন খেরসনে বেসামরিক জনগণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে রুশ প্রশাসন। খবর ইজভেস্তিয়া।

খেরসন পুনর্দখলে নতুন করে হামলা শুরু করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী

রুশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে খেরসনের অধিবাসীদের মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে দনিপার নদীর বাম পাশে অথবা রাশিয়ার অন্য যে কোনো অঞ্চলে সরে যাবার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। আজ সকাল থেকে এসব মেসেজ পেতে শুরু করেছেন স্থানীয়রা।

খেরসনের গভর্নর ভলোদিমির সালদো বলেছেন, বেসামরিক প্রশাসনের সব মন্ত্রণালয় ও দপ্তর নদীর অপর পাড়ে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি নদীর ডান দিকে বসবাসরত ৬০ হাজার অধিবাসীকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ছয়দিনের মধ্যে এ কাজ শেষ হবে। কোনোভাবেই ইউক্রেনীয় বাহিনীকে খেরসন দখলের সুযোগ দেওয়া হবে না।

রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ (এনএসসি) আজ বিকেলে বিশেষ বৈঠকে বসছে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ বৈঠকে যোগ দেবেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট ও এনএসসির ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ বৈঠকে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করবেন। বৈঠকে শরণার্থী সমস্যা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।

ইউক্রেনের মিসাইল ও গোলাবর্ষণ থেকে খেরসনের অধিবাসীদের সুরক্ষা দিতে রুশ পার্লামেন্টে প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন দুমার প্রতিরক্ষা বিষয়ক কমিটির কয়েকজন সদস্য। পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ফেডারেশন কাউন্সিলের অধিবেশন এনএসসি বৈঠক শেষ হওয়া পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। এনএসসির বৈঠকের পর সিনেটররা আবার অধিবেশনে বসবেন। রাশিয়ার এনএসসি ও ফেডারেশন কাউন্সিল থেকে আজ সন্ধ্যায় গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আজ সকাল থেকে আন্তনোভস্কি সেতু, নোভা খাকভকা জলবিদ্যুৎকন্দ্রসহ খেরসনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ্য করে মিসাইল হামলা শুরু করে ইউক্রেনীয় বাহিনী। রুশ বাহিনী অন্তত পাঁচটি মিসাইল ভূপাতিত করার দাবি করেছে। দুপুর থেকে বেরিস্লাভ ও নোভায়া খামেনকা এলাকা হয়ে খেরসনের দিকে অগ্রসর হয় ইউক্রেনীয় বাহিনীর দুটি ব্যাটালিয়ন। প্রায় এক হাজার সৈন্যের এ দুটি ব্যাটালিয়নকে স্থলপথে ও আকাশ থেকে সমর্থন জোগাচ্ছে ইউক্রেনের গোলন্দাজ বাহিনী ও ড্রোন বহর।

গতকাল রাতে এক ভিডিও বার্তায় খেরসনের ডেপুটি গভর্নর কিরিল স্ত্রিমুসভ স্থানীয় অধিবাসীদের অবিলম্বে নিরাপদ স্থানে সরে যাবার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কিয়েভ কর্তৃপক্ষ ফ্রন্টলাইনে বিপূল সংখ্যক ভাড়াটে যোদ্ধা ও অস্ত্র সমাবেশ করেছে। দনিপার নদীর ডান পাড়ের বসতিগুলো তাদের গোলাবর্ষণের শিকার হতে পারে।